নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ির রামগড়ে এক গৃহবধূর দায়ের করা ধর্ষণ মামলার আসামি মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিক(৬৫) নামে এক ব্যবসায়ী ও তার সহযোগি মো.মোস্তফার বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ ইতিমধ্যে মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিকের পাসপোর্ট জব্দ করে। চার্জশীটভুক্তরা গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে আদালত হতে জামিনে আছে। তারা দুজনই রামগড় পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ তদন্ত, বাদী-বিবাদির বক্তব্য,এবং তথ্য প্রমাণ নিশ্চিত হওয়ার পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা রামগড় থানার এসআই মো. শামছুল আমিন আসামী মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিক, পিতা মৃত মাতব্বর আলী সিকদার ও মো. মোস্তফা পিতা অদুদ মিয়ার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, (সংশোধিত ২০১০) ৯(১)৩০ ধারা ও পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(২) ধারায় আদালতে চার্জশীট (নম্বর -৩৪ তারিখ ১৭-৮-২৩) দাখিল করেন।
এর আগে গোপনে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়ার বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ১ নম্বর আসামি মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিকের পাসপোর্ট জব্দ করে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ রাধামালা ত্রিপুরার (ছদ্ম নাম) অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রামগড় শহরের উপকন্ঠে পুরাতন কৃষিব্যাংক ভবন সংলগ্নে একটি আবাসিক কোয়ার্টারে ভাড়া বাসায় থাকাকালীন পার্শ্ববর্তী ভবনের মালিক মোফাজ্জল হোসেন সিকদার প্রকাশ মল্লিক নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে প্রতিবেশী হিসেবে তাদের পরিচয় হয়। একদিন প্রতিবেশী মল্লিক তাকে মোস্তফা টেইলার নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় মল্লিক তার স্মার্টফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেন। ধর্ষণের পর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে বলা হয় এবং প্রকাশ করলে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় মল্লিক।
রাধামালা আরও অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে আপত্তিকর ভিডিও প্রচারের হুমকি দিয়ে মল্লিক তাকে বহুবার ধর্ষণ করেছে। তার অত্যাচারে এক পর্যায়ে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে বাসা ভাড়া নিয়ে চলে যাওয়ার পরও তিনি মল্লিকের পাশবিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে পারেননি। ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরারঞ্জের ভাড়া বাসায় গিয়েও সে তাকে ধর্ষণ করে।
তিনি বলেন, এক সময় তার স্বামীকে পুরো ঘটনা জানানোর পর তার পরামর্শে খাগড়াছড়িতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মোফাজ্জল হোসেন সিকদার (মল্লিক) ও তার সহযোগি মো. মোস্তফা টেইলারকে আসামী করে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে ২১-৩-২৩ তারিখ রামগড় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, (সংশোধিত ২০১০) ৯(১)৩০ ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
সূত্র জানায়, থানায় মামলা রুজুর পরই আসামীদ্বয় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেয়। পরে জামিনের মেয়াদের শেষ দিনে ৮ মে খাগড়াছড়িতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে দুই আসামীকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। পরে পুনরায় তারা জামিনে ছাড়া পান।