নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় চলছে পাহাড় কাঠার মহোৎসব। ছোটবড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক পাহাড় কাটা হয়েছে। পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি, আবাস্থল গড়ে তোলা, গভির খাদ ভরাট করা হচ্ছে। ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত গুইমারা উপজেলাতে অর্ধশতাধিক পাহাড় কাটা হয়েছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
২৮শে ফেব্রুয়ারী থেকে গুইমারা সরকারি মডেল স্কুলের পাহাড় কেটে বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি গাড়ি পনেরশত টাকা থেকে দুই হাজার টাকায়। জানা যায়, একটি অবৈধ পাহাড় কর্তনকারী চক্ররা স্কুলের পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে। রাতের অধারে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। একটি পাহাড় খেকো চক্র প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় কাটছে। সম্প্রতি গুইমারা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের পাহাড় কাটা বন্ধের জন্য সহযোগিতা কারার আহ্বান করলেও এখনো বন্ধ হয়নি পাহাড় কাটা। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ধারা ৬ এর (খ) স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধাসরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাবে না।
সম্প্রতি গুইমারা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে যে পাহাড়টি আছে তা কেটে শহিদ মিনার ও বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে জানায় বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ কিন্তু তা না করে রাতের আধারে মাটি কেটে বাহিরে পাহাড় খেকো ও দুষ্ট চক্রের মাধ্যমে বিক্রয়ে মেতে উঠেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গুইমারা উপজেলার বাইল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালের পাশে স্কেভটর দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, জুলি ত্রিপুড়া ও রাজন পাল নামের ব্যাক্তি পাহাড় কাটার সাথে জড়িত। পাহাড় কাটার সাথে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিধন করা হচ্ছে। প্রতিদিন এইখান থেকেই ট্রাক্টর দিয়ে ৫০ ট্রিপ মাটি বিভিন্ন স্থাপনা ভরাটের কাজে এ মাটি বিক্রি হয়। বাইল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০০ গজ সামনে বাইল্যাছড়ি ব্রিজের পাশে আরেক ব্যাক্তি ও স্কেভটর দিয়ে মাটি কাটছে। এছাড়াও গুইমারা উপজেলা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ ভাবে মাটি কেটে নিচ্ছে পাহাড় খেকোরা। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মাঝে চাপা ক্ষোভ থাকলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও পারছেন না। প্রভাবশালী মহলটি ক্ষমতার দাপট ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাহাড়ের মাটি কেটে সাবাড় করে ফেলছে। ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে।
সম্প্রতি গুইমারা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী বলেন, পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। পাহাড় কাটলে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বলেন অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করতে হবে। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।