নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি:: পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেছেন, ‘২০০ বছর ব্রিটিশ শাসন গেলো, ২৩ বছরের পাকিস্তান শাসন গেলো, অনেক সরকার এলো গেলো, এর আগে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ কোনো সরকারই করে যায়নি। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পেরেছিলেন অশান্ত পার্বত্য অঞ্চলকে শান্ত করতে। কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই পার্বত্য অঞ্চলে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বাঙালহালিয়া কলেজের একাডেমিক ভবন, কলেজ ছাত্রাবাস, বাঙালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা প্রাচীর গাইড ওয়াল ভিত্তিপ্রস্তর, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধন ও বাঙালহালিয়া ডাক বাংলা পাড়া বৌদ্ধ বিহার উদ্বোধন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি-সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আলম চৌধুরী, রাজস্থলী উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য নিউচিং মারমা, রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শান্তনু কুমার দাশ, বান্দরবান সদর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজা সরোয়ার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবুল কাসেম চৌধুরী, উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী প্রসিত চাকমা, সহকারী প্রকৌশলী ত্রয়া সরকার, উপসহকারী প্রকৌশলী মুক্তার হোসেন, চন্দ্রঘোনা থানা ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, বাঙালহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আদোমং মারমা, গাইন্দ্যা ইউপি চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা , এলাকার সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রেরণার উৎস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। আজ পার্বত্য জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে স্কুল কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে, শিক্ষা ক্ষেত্রে, যোগাযোগ ক্ষেত্রে প্রত্যেক জায়গায় উন্নয়ন হয়েছে। পাকা রাস্তা, ড্রেন, ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, বিহার , গির্জা এমনকিছু বাদ নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। একটি বাড়ি একটি খামার, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেয়া হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তির ব্যবহার পার্বত্য ছেলে মেয়েরা অনায়াশেই করতে পারছে। ছেলেমেয়েরা ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া পাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষরা কোনোদিনই এতো উন্নয়ন দেখে নাই। দুঃখ কষ্ট মানুষের মনে থাকতে পারে। যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না, তারাই ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতে চায়। সংঘাত, অশান্তি কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। অহিংস বাণী নিয়ে আমাদের এগুতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট শেখ হাসিনা সরকারই করেছে। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে কাজ করছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে।’
বীর বাহাদুর বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষ কখনো কারো বোঝা নয়। দেশের কল্যাণে, পার্বত্যবাসীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী আছেন এবং সবসময় থাকবেন। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের উন্নয়ন কাজে সকলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগে পার্বত্য এলাকায় কোনো মেডিকেল কলেজ ছিল না, বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য জেলাগুলোতে থানা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছে। আপনারা দেখেন, দেশের কোন উপজেলাতে দুইটি সরকারি কলেজ নেই। আছে শুধু রাজস্থলীতে। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার সৎইচ্ছার কারণে আজ আলোকিত হচ্ছে পার্বত্য রাজস্থলী।’