নুরুল আলম:: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত দুইমাস ধরে সশস্ত্র বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর বিশৃঙ্খলায় সৃষ্টি হয়। যার ফলে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ সীমান্ত জুড়ে বসবাসরত মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
আবারো তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে দুই রোহিঙ্গা হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঝোপ-জঙ্গল থেকে মাইন সরিয়ে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) বারবার তাগাদা দেয়ার পরেও মিয়ানমার বর্ডারগার্ড পুলিশ (বিজিপি) তা উপেক্ষা করে চলেছে। এ অবস্থার কারণে সীমান্তে শুধু রোহিঙ্গা নয়-গবাদি পশুসহ বাংলাদেশি নাগরিকরাও মাইন বিস্ফোরণে হাতাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
রবিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইনের পূর্ব পাশে জঙ্গলে মাইন বিস্ফোরণে দিল মোহাম্মদ নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছে এবং নুরুল বশর নামে অপর এক রোহিঙ্গার একটি পা উড়ে গেছে।
জানা যায়, তুমব্রু সীমান্তে কয়েকদিন ধরে গোলাগুলির ঘটনা থেমে গেলেও স্থল মাইন আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে। তুমব্রু সীমান্ত থেকে হামিদুল হক নামে একজন শিক্ষক জানান, প্রায় দেড়মাসের বেশি সময় ধরে গোলার শব্দে তটস্থ ছিলাম আমরা। কয়েকদিন ধরে তেমন কোন বিকট শব্দ কানে আসেনি।
তবে এখন মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে চলছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘর্ষ। শুরুর দিকে এ সংঘর্ষের ক্ষেত্র ছিল পার্বত্য জেলার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে কয়েকটি পাহাড়।
তবে ক্রমে সংঘর্ষের ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে মনংডু আকিয়াবের দিকে। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহ ধরে আরাকানের জেলা শহর মংডু থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আনা নেয়া বন্ধ হয়ে গেছে। মংডুর অবস্থান টেকনাফের উল্টো পাশে নাফ নদীর ওপারে। টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে শহরটির মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরত্ব।
টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য অচল হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এখন চারশত কিলোমিটার দূরের মিয়ানমারের বিভাগীয় বন্দরনগর আকিয়াব (সিথুয়ে) থেকে তারা অল্পসল্প পণ্য আনছেন বলে জানা গেছে। তবে এতে তাদের ব্যয় বেড়েছে অনেক।
এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে টেকনাফের স্থানীয় প্রশাসন সোমবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সাগর পথে যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।