নেই বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষক
মো. সোহেল রানা দীঘিনালা:: শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড! সুন্দর পরিবেশ , সুন্দর শ্রেনি কক্ষ সকাল ১০ টায় ক্লাস শুরু হয় বিকাল ৪ টায় ছুটি হয়। শিক্ষার্থী ৫শতাধিক। বিজ্ঞান মানবিক ব্যবসা শাখা আছে নেই শুধু শিক্ষক। মানবিক বিভাগে শিক্ষক দিয়েই চলছে বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখার পাঠদান।
২৫জন শিক্ষক থাকার কথা আছে মাত্র ৬ জন তা আবার মনবিক বিভাগের। উপজেলার একমাত্র সরকারী বিদ্যাপিঠ এভাবে বিজ্ঞান বিভাগ, মানবিক বিভাগ ও ব্যবসা বিভাগের শিক্ষার্থীদের উজ্জ¦ল ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শিক্ষকের অভাবে।
দীঘিনালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপ চন্দ্র দাশ বলেন, ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৪সালে সরকারীকরন হয়। ২০০৬সাল থেকে স্থায়ী ভাবে প্রধান শিক্ষক নাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব। বিষয় ভিক্তিকসহ ২৫জন শিক্ষক পদ থাকলেও মাত্র ৬জন মানবিক শাখার শিক্ষক দিয়ে চালাছি স্কুলের পাঠদান।
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ শূণ্য রয়েছে ২০০৬ সাল থেকে। ইংরেজি শিক্ষক ২টিপদে একজন কর্মরত রয়েছে, গনিত ২পদ খালি, সমাজ বিজ্ঞান ২পদে একজন কর্মরত রয়েছে, কৃষি ১টি পদ খালি, ইসলাম ধর্ম ১টি পদ খালি,শারিরীক শিক্ষা ১টি পদ খালি, ভূগোল ১টি পদ খালি, বিজ্ঞান বিভাগের ভৌত বিজ্ঞান ২টি পদ শূন্য, জীব বিজ্ঞান ২টি পদ শূন্য, ব্যবসা শিক্ষার ২টি পদ ১টি শূন্য রয়েছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ বিষয় ভিক্তিক শিক্ষক না বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যতদ্রুত সম্ভব শূণ্যপদে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক পদায়নের দাবী শিক্ষার্থীদের। মো: জাহিদ হাসান বিজ্ঞান বিভাগের ১০শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, আমি দীঘিনালা সরাকরী উচ্চ বিদ্যালয় ৬ষ্ট শ্রেনিতে ভর্তি হই নবম শ্রেণি বিজ্ঞান শাখা নেই নবম শ্রেণি থেকে কোন বিজ্ঞান শাখার শিক্ষক পাই নাই।
বাংলা সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক দিয়ে বিজ্ঞান শাখার ক্লাস করানো হয় এতে করে আমারা পদার্থ বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিত ভাল করে বুঝতে পারি না। এই ধরনে পড়ালেখা করে ভবিষৎতে ভাল কিছু করতে পারব না। তাই আমারা সরকারের কাছে দাবী করছি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক দেয়ার জন্য।
বিজ্ঞান শাখার ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তুনা চাকমা বলের, আমাদের বিজ্ঞান শাখার ক্লাস নিচ্ছে মানবিক শাখার শিক্ষকরা এতে আমাদের বিজ্ঞান শাখার বিষয়গুলো ভাল করে বুঝতে পারি না।
৯ম শ্রেণির ছাত্রী ফায়াতুন মেহজাবিন কনা বলেন আমাদের বিদ্যালয়ে ব্যবসা ও বিজ্ঞান শাখার কোন শিক্ষাক নেই। বাংলা ও সমাজবিজ্ঞান শিক্ষরাই ব্যবসা ও বিজ্ঞান শাখার ক্লাস নেন। এতে আমারা ভাল করে কিছু শিখতে পারি না।
৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার রুদ্রদেব বলেন, বিজ্ঞান শাখার কোন বিষয়ে শিক্ষক নাই। উচ্চতর গনিত, ভৌত বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান বাংলা ও সমাজজ্ঞিান শিক্ষকরা পাড়ান এতে করে আমারা ভাল করে বুঝতে পারি না। বিজ্ঞান শাখার শিক্ষক না আসলে আমারা বিজ্ঞান শাখার পড়ে ভাল করতে পারব না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, আমি উপজেলা যোগদান করা পর দীঘিনালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরির্দশন করেছি, শিক্ষক সংকট বিষয়টা অবগত হই। স্কুলের অবকাঠামো গত উন্নয়নের নিয়োমিত ক্লাস চালু রাখতে পরামর্শ দিয়েছি। এবিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মহোদয়র কাছে লিখিত পত্র প্রেরন করা হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: কাশেম বলেন, দীঘিনালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের ২৫জন শিক্ষকের পদ থাকলেও মাত্র ৬জন শিক্ষক কর্মরত আছে। বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখার কোন শিক্ষক নাই।
এ কারনে আমাদের এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা অনেক সমস্যা হচ্ছে। সরকার একাডেমিক ভবন ও ছাত্রী নিবাস করে দিচ্ছেন কিন্তু শিক্ষক দিচ্ছেন না, আমি আশা করি সরকার এবিষয়টা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার মান রজায় রাখবেন।
অভিভাবক মো: আব্দুল করিম বলেন, আমার মেয়ে দীঘিনালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে। বিজ্ঞান বিভাগের কোন স্যার নাই, ভবিষৎতে ভাল কিছু করতে পারবে আশা করতে পারছি না।