নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারাসহ বিভিন্ন উপজেলায় অবাধে চলছে পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলনের উৎসব। পাহাড় খেকোরা হরেক রকম করে নির্বিচারে কাটছে পাহাড়, বনাঞ্চল, ফসলি মাঠের জমি। প্রতিবছর এ পাহাড় কাটার এ উৎসব মূলত শুরু হয় বছরের শুরু থেকে।
গত ২৯ মে (রবিবার) গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক বাজার সংলগ্ন মসজিদ মাদ্রাসার জায়গা ছৈয়দ হোসেন আশকারী দাবী করে জায়গায় বোল্ডেজার দিয়ে রাতের অন্ধকারে পাহাড় কাটে। এ সংবাদ পেয়ে সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলতে গেলে পাহাড়খেকোরা এতে বাঁধা প্রদান করে এবং সাংবাদিকদের হুমকি দেয়। সাংবাদিকদের হুমকি ও তাদের সাথে অসাদাচারণ করায় গুইমারা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বড়পিলাকের পাহাড় কাটার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর হাসান আলভী সুমন সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
অভিযোগ রয়েছে কমিশনের বিনিময়ে এ চক্রটিকে প্রত্যক্ষ সমর্থন দিচ্ছেন দুষ্টচক্রের কিছু সুবিধাবাদী ব্যক্তিবিশেষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের অপরাধে জরিমানা করলেও কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে আবারো পাহাড় কাটায় ব্যস্ত হয়ে যায় পাহাড় খেকোরা। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে নির্বিচারে পাহাড় কাটার জন্য প্রশাসনকে দুষছে স্থানীয় জনগণ।
জানা যায়, জেলার গুইমারা, রামগড়, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি, লক্ষীছড়ি ও খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় এস্কেভেটর ব্যবহার করে নির্বিচারে পাহাড় কেটে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় দুষ্টচক্রের ছত্রছায়ায় পাহাড়-টিলা ধ্বংস করা হচ্ছে। রাস্তা তৈরি বা মেরামতের অজুহাতসহ নানা কায়দা-কৌশলে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এক ড্রাম ট্রাক পাহাড় কাটা মাটি বিক্রি করা হয় ১ হাজার ২ শত টাকা হতে ১ হাজার ৪ শত টাকা টাকায়। আর ফসলি জমির মাটি বিক্রি হয় ১ হাজার ৮ শত ৫০ টাকা। ইটের ভাঁটায় সরবরাহ করা এক ড্রাম ট্রাক মাটি বিক্রির ১ হাজার ৮ শত ৫০ টাকার মধ্যে ১ হাজার ৪ শত টাকা পায় বিক্রেতা আর ৪ শত ৫০ টাকা যায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারিদের কাছে।
এ বিষয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার আহমেদ বলেন, যখনই পাহাড় কাটার সংবাদ পাই, তখনই অভিযানে যাই। অবৈধ পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং কঠোর হস্তে সেটি দমন করা হবে।