মনু মারমা, রাঙ্গামাটি প্রতিবেদক: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান ‘বৈসাবি উৎসব’। তবে এ বছর করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় নানা আনুষ্ঠানিকতায় এই উৎসব শুরু হয়েছে জাঁকজমকভাবে। এ বৈসাবি উৎসবে মেতেছে পাহাড়ের মানুষ। পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে আবারও জমে উঠেছে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক বিষু মেলা। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে শুরু হওয়া এ মেলা রাত ১০টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলে।
বিকেল থেকে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট মাঠে দর্শনার্থীদের পদচারণায় কানায় কানায় ভরে উঠে। এইবারের মেলায় পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র, খাবার এবং পাহাড়ি অংলংকার এবং ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠির হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি নিয়ে তৈলচিত্রসহ বিভিন্ন স্টল স্থান পেয়েছে।
মেলায় খাবারের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ হলো পাঁজন। পাহাড়ি সমাজে কথিত আছে পুষ্টি সমৃদ্ধ এ খাবার খেলে রোগ-বালাই থেকে মুক্তি লাভ করে। হরেক রকম পদ যেমন- আলু, ঢেঁরশ, গাজর, মটরশুটি, টমেটো, বরবটিসহ প্রায় ৬০প্রকার সবজি মিশ্রণে এ খাবার তৈরি করা হয়। বিজুর দিনে অতিথিদের এ খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন পিঠা, পুলি, শামুক, চটপটি খাবার হরদম বিক্রি হচ্ছে।
পোশাকের মধ্যে থামি, পিনন বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশীয় বস্ত্রও বিক্রি হচ্ছে। শুধু না তাই নয়; মাঠে প্রতিদিন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির যুবকদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলাসহ নানা ধরণের পাহাড়ি ঐতিহ্যবাহী খেলা নিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যা দেখতে সাধারণ দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলে স্থানীয় পাহাড়ি শিল্পীরা নাচে-গানে পুরো মাঠ মাতিয়ে রাখছে।
৪ এপ্রিল বিকেলে জেলা পরিষদের আয়োজনে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট মাঠে প্রধান অতিথি থেকে পাঁচ দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক মেলার উদ্বোধন করেন-খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। মেলার পরিসমাপ্তি ঘটবে আগামী ০৮এপ্রিল পর্যন্ত।