নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পৌর শহর ঘেঁষা পেরাছড়া ইউনিয়নের বগরাপাড়া,ছোটপাড়া,বড়পাড়া, চন্দ্র কুমার পাড়াসহ ৫’গ্রামে স্বাধীনতার ৫১ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া। ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত ৫ গ্রামের মানুষের জীবন কাটছে কাঁচা মাটির সড়কে দূর্গম পথ পেরিয়ে রাতে বিদ্যুৎহীন অন্ধকার আর বিশুদ্ধ পানিসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫১ বছরেও উন্নয়নের সড়কের পথে হাঠার সেই ব্রীক ছলিংও না থাকায় হতাশ স্থানীয় উপজাতীরা। এ যেন উন্নয়নের রোল মডেলের সময়েও ৫ গ্রামবাসী দারিদ্রতায় অভিশপ্ত। ভোটের রাজনীতিতে বড় একটি অংশ বর্তমান সরকারের সমর্থন এবং উন্নয়ন ধারাবাহিকতায় পাশে থাকলেও জেলা সদরের পাশে এমন দৃশ্য আলোর নিচে অন্ধকারে মতই বলে অভিমত সচেতন মহলের।
গাছবান বগরাপাড়ার এলাকার বাসিন্দা আনন্দ কুমার বলেন, পাড়াবাসী অসুস্থ হলে রাস্তাঘাট না থাকায় কষ্ট পেতে হয়। ডাক্তারের খোঁজে কাঁধে ভার করে রোগি নিয়ে যেতেই অসুস্থরা মৃত্যুর পথযাত্রী হয়ে পড়ে বলে আক্ষেপ জানিয়ে দ্রুত উন্নয়ন বোর্ড,জেলা পরিষদসহ সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বিদ্যুৎ নেই,পানি নেই, নেই রাস্তা এমন অবস্থায় বঞ্চিত থাকার কষ্টের কথা জানিয়ে স্থানীয় গৃহবধু জানান, নারীরা গর্ভবতি হলেও তাদের সড়কের অভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটাও এই গ্রামে স্বপ্ন দেখার মত। ২০২২ সালে এসে অবহেলীত থাকার বিষয়টি নিয়ে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে সরকারের প্রতি সু-নজর দেওয়ার দাবী জানান।
বগরাপাড়ার যুগেশ কার্বারী জানান, এলাকার বাসিন্দার কষ্টের শেষ নেই। যুগ যুগ পেরিয়ে গেলেও পূর্ব পুরুষরা যেমন সুবিধা বঞ্চিত ছিল এখনো সেরকমই রয়ে গেছে জানিয়ে তিনি অত্র এলাকায় দ্রুত পাকা সড়কের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ,পানিসহ সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিকতার যুক্ত করলে দীর্ঘ কষ্টের দিন লাগব হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
একই সাথে স্থানীয়দের বাগান বাগিচার ফল,মুল, কাঁচা মাল বাজারে সরবরাহের জন্য পাকা প্রশস্ত ব্রীজ নির্মানেরও দাবী জানান তিনি। উন্নয়নের ছোয়া লাগলে এই পথ ধরে ৫ গ্রামের ১২শ মানুষের চলাচলের পথ সুগম হবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিগ্নে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে পারবে বলেও তিনি জানান।
পেরাছড়া ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আকাশ জানান, দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত এই এলাকার উন্নয়নে সরকারের নজরদারী জরুরী। তিনি বলেন, স্থানীয় কৃষকরা রাস্তঘাট না থাকায় ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। এছাড়াও নামে মাত্র একটি ফুটব্রীজ নির্মাণ করা হলেও সাধারন মানুষ চলাচল করা গেলেও কোন গাড়ি চলাচল করতে না পারায় দূর্গম পাহাড়ি এই পথ পেরিয়ে কাঁচা কলা,আম,কাঠাল,লিচু থেকে শুরু করে উৎপাদিত পন্য পাহাড়িদের আয়ের মাধ্যমগুলো বাজার জাতের পথেই অর্ধেকের বেশি পরিবহনে ব্যায় হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের দারিদ্রতা এক রকম অভিশাপে পরিণত হয়েছে বলে তিনি জানান। এছাড়াও কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের খরচটুকুর উঠানো অসম্ভব হয়ে উঠছে না বলে তিনি জানান।
পেরাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান তপন বিকাশ ত্রিপুরা দ্রুত অবহেলিত গ্রামগুলোর উন্নয়নে সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করে বলেন, দেশের চলমান উন্নয়নের সাথে পাহাড়ি এই জনপদের দিকে দৃষ্টি দিলে ৫গ্রামের মানুষের কষ্ট থাকবে না। সে সাথে ব্রীজ সলিং,প্রশস্ত কালভার্ট,বিদ্যুৎ,বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিলে অভিশাপ থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠি মুক্তি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।