শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪


নুরুল আলম:: পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির আবাদি জমির ওপর অবাধে চলছে তামাক চাষ। অন্যদিকে তামাক চুল্লিতে পোড়াতে পাহাড়ে নির্বিচারে চলছে প্রাকৃতিক বনের গাছ কাটার হিড়িক।

নির্বিচারে গাছ কাটায় প্রাকৃতিক বনে ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া তামাক চাষে ফসলি জমির উর্বŸাশক্তি নষ্ট হচ্ছে। জমিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক স্যার, কীটনাশক ও জ্বালানী কাঠ ব্যবহারে জীববৈচিত্র্যে প্রভাব পড়ছে। প্রতিবছর তামাকের চাষ বেড়ে রবি ফসলের জমিগুলো দখল করছে বলে দাবি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুটি জেলার বিভিন্ন স্থানে আবাদি জমিতে তামাকের চারা রোপণ করা হচ্ছে। আবার কোথাও তামাকের পাতা গজিয়ে সবুজ হয়েছে বিল। তামাক চুল্লিতে পোড়ানোর জন্য অনেক জঙ্গলে কিংবা রাস্তার পাশে কাঠ কেটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে চুল্লিতে তামাক শুকানো হয়। চুল্লি তৈরিতে অনেককেই ব্যস্ত দেখা যায়।

অন্যদিকে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা, মাটিরাঙ্গা, লক্ষ্মিছড়ি, মহালছড়ি, পানছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় তামাক চাষে মহা’সব চলছে। চুল্রিতে তামাক শুকানো হয় এছাড়াও রাস্তার পাশে কাঠ কেটে স্তুপ করে রাখা হয় এসব তামাক শুকানো জন্য। এসকল অবৈধ কর্মমান্ডে রোধে প্রশাসনের কোনো প্রকার উদ্যোগ নেই বলে জানান সচেতন মহল।

দিঘীনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের এক ব্যক্তি জানান বলেন, মৌসুমি শাকসবজি চাষ করলে যেখানে সার আর কীটনাশকের জনগণের ধারে ধারে গিয়ে ঘুরতে হয়, সেখানে তামাক চাষে এসব না চাইতেই এসে যায়। এ ছাড়া মৌসুমি শাকসবজি বাজারজাতকরণ ও যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় লোকসান গুনতে হয়।

তারা জানান, এক হেক্টর জমিতে তামাক চাষ করে উ’পাদান ভালো হলে খরচ বাদ দিয়ে ২-৩ লাখ টাকা আয় হয়।

দিঘীনালা উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, গরিব নিরিহ মানুষের ফসলি জমি তামাক ব্যবসায়িদের কাছে ব’সরিক চুক্তিভিত্তিক টাকা নিয়ে তামাক চাষ করার জন্য জায়গা দিয়ে থাকে । এর ফলে তামাক ব্যবসায়ি টবাকো কোম্পানি এইসকল জমিতে তামাকের চাষাবাদ করে। ফলে ফসলী জমি ক্ষতি হচ্ছে। পূণরায় ফসল ফলাতে গেলে দেখা যাচ্ছে সেই জমিতে আগের মতো রবি ফসল জন্মাচ্ছে না।

খাগড়াছড়ি জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, তামাকের গন্ধে তা’ক্ষনিকভাবে রোগ দেখা না দিলেও পরে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থঝুকিঁ রয়েছে। এতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগে তামাক চাষের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই। তবে তিনটি ইউনিয়নে চাষি ও তামাক কোম্পানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর প্রায় ২শত ৬৩ হেক্টরের বেশি জমিতে রবি ফসলের চাষ হয়। কিন্তু তামাক চাষের প্রভাবে এর পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তামাক চাষ বন্ধ না হলে রবি ফসল চাষের পরিমাণ কমতে থাকবে।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বলেন, তামাক চাষ বন্ধে কৃষি বিভাগ থেকে বাদাম, ডাল, সরিষা, ভূট্টা ও উচ্চফলনশীল ধানের বীজ হতদরিদ্র কৃষকদের বিনা মূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। তামাক বন্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে সামাজিক সচেতনতা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিষয়ে প্রচার অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বেসরকারি উন্নয়ণ সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!