নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়িতে অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যাহত, প্রশাসন নিরব। জেলার ৯ টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মাটি ও বালি পাচারকারি এবং সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো খাগড়াছড়ি। এতে রয়েছে দেড় শতাধিক বালু মহাল। প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে অবৈধ বালু ট্রাকটার ও ট্রাকে বোঝাই করে দিনের বেলায় পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন ইটের ভাটাসহ অন্যান্য এলাকায়।
সংবাদ পত্রে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরও প্রশাসনের নিরব ভুমিকার কারণে তারা তাদের অবৈধ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একেরপর এক পাহাড় কর্তন, মাটি পাচার, ইজারা ব্যতিরেখে খাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন করে যাচ্ছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। বিভিন্ন ইটের ভাটাসহ বাহিরের এলাকায় পাঠানো হচ্ছে এসব বালু ও মাটি।
সম্প্রতি সরেজমিন পরিদশর্ন গিয়ে, খাগড়াছড়ি জেলাশহর, দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড় মানিকছড়ি, গুইমারা, লক্ষ্মিছড়ি এবং মহালছড়ি এলাকায় বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে৷
স্থানীয়রা বলছে, এই এলাকায় পাহাড় খেকো ও বালু উত্তোলন কারি একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা ব্যক্তিবিশেষ কে ম্যানেজ করে পাহাড় কাটে এবং খালে বালু উত্তোলনের মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করে।
এলাকাবাসীর দাবি, খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উদ্ধোতন কর্মকর্তা, যেমন জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিরবতার কারনে এ সকল অবৈক কর্মকান্ড দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এসব বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত স্থানীয় এক শ্রেনীর আইন অমান্যকারীচক্র। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে হাত হাত করে এসব অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনি ঘটনার দৃষ্টি গোচর হয়েছে মানিকছড়ি উপজেলার ৪নং তিনটহরী ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ নিজস্ব লোক জনদিয়ে খাল বিল অন্যের জমি চরের বালু উত্তোলন সহ ফাঁকা রাস্তা বিনষ্ট করে যাচ্ছে। সে চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন নিরীহ মানুষের নিজস্ব লোক জন দিয়ে অবৈধ ভাবে রের্কডি জায়গা দখল করা সহ এ সকল অবৈধ কাজে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, এখানে বিশাল একটি সিন্ডিকেট হয়েছে। তাদের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছে- খাগড়াছড়ি জেলাশহরসহ মোট ৯টি উপজেলায় এই সকল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেড় শতাধিক অবৈধ বালু মাহাল।
সম্প্রতি, গুইমারা উপজেলার বাইল্যাছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার দায়ে সাচিং মারমা নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়াও মাটিরাঙায় দুইটি বালুর মাহালে জড়িমানা করেছে ৫০ হাজার টাকা করে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার আহমেদ বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে চলমান থাকবে। সরকারের অনুমোদনহীন বালুর ঘাট ও অবৈধভাবে পাহাড় কাটার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।
উক্ত উপজেলার এলাকাবাসী ও সচেতন নাগরিক সমাজের অভিমত ব্যক্ত করে বলে, গুইমারা আরো বালুর ঘাট রয়েছে। অন্যান্য উপজেলায় রয়েছে প্রায় আরো দেড়শতাধীক বালুর ঘাট। বালুর উত্তোলন কারীদের জন্য করা আইনের তোয়াক্কা না করে তারা নির্ধিদায় বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। সুত্রে জানা যায়, প্রভাবশালীরা এসব অপকর্মে সাথে জড়িত বলে কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।