নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়ি থেকে দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা পর নিহত জেএসএস নেতা সুরেশ চাকমার লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। সুরেশ চাকমা নিহত হওয়ার পর পুলিশ সকালে লাশ উদ্ধারে তার বাড়িতে গেলেও পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা লাশের ব্যাপারে পুলিশের কাছে মুখ খোলেনি এমনকি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরপর পুলিশ থানায় ফিরে এলে অজ্ঞাত সূত্র থেকে বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে টেলিফোনে লাশের সন্ধান দেয়া হয়। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি ঝিরির ভিতর লাশটি দেখতে পেয়ে থানায় নিয়ে আসে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেলা সদরে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানাগেছে। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বি-ব্লক এলাকায় এক কারবারির বাড়িতে সুরেশ চাকমা ওরফে জীবেশ চাকমা (৫৫)কে গুলি করে হত্য করা হয়ে বলে জানিয়ে পুলিশ।
জানা যায়, নিহত সুরেশ চন্দ্র, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সবশেষ তিনি সংগঠনটির উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিচার কমিটির উপজেলা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
এই হত্যাকাণ্ডে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে মন্টা চাকমা বলেন, আমার বাবার কর্মফল সে ভোগ করেছে। এই বিষয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। সুরেশ চাকমা গত রবিবার বাড়িতে এসেছিলেন। তবে আগেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন প্রতিপক্ষরা তাকে হত্য করতে পারে। তাই পাশেই কারবারির বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।
শুক্রবার ভোর পাঁচটার দিকে মুখোশধারী তিন সন্ত্রাসী উক্ত বাড়িতে প্রবেশ করলে সুরেশ চাকমা বিষয়টি বুঝতে পেরে যে খাটে ঘুমিয়ে ছিলেন সেই খাটের নিচে আত্মগোপন করেন। সন্ত্রাসীরা ঘরে প্রবেশ করে খাটের নিচেই গুলি করে তাকে হত্যা করে চলে যায়।
জেএসএস সন্তু লারমা দলের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা ওরপে দীপ বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের থানা কমিটির সদস্যকে ঘুমন্ত অবস্থায় নিজ বাড়ীতে জেএসএস এমএন লারমা দলের অস্ত্রধারীরা গুলি করে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। এবং এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি করছি।’
সুরেশ চন্দ্র চাকমার মেয়ে মন্টা চাকমা বলেন, আমার বাবার সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই। মোবাইলেও খুব একটা যোগাযোগ হতো না। তিনি মারা গেছেন শুনেছি, তবে লাশ দেখিনি।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস এমএনলারমা দলের সভাপতি জ্ঞানজীব চাকমা বলেন, ‘আমাদের দলে কোন সন্ত্রাসী কার্যক্রম নাই। আমরা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের কাজ করছি। তাঁদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তারা নিজেদের লোকের গুলিতে নিজেরাই নিহত হয়েছে।’