নিজস্ব প্রতিবেদক
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ‘পরিচালনা বোর্ড’ এর ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৪র্থ সভা অনলাইন জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে রোববার বিকাল ৩.৩০ টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আশীষ কুমার বড়ুয়া। সভার আলোচ্য বিষয় ছিল (১) গত ১ মার্চ, ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা (২) ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের ০৬ জুন ২০২১ পর্যন্ত সময়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং (গ) বিবিধ।
শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আশীষ কুমার বড়ুয়া সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ডিজিটাল সুফল সম্পর্কে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অনলাইনে বিভিন্ন কার্যক্রমকেযুক্ত করা হয়েছে। তারই সুফল হিসেবে বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালিনও অনলাইন জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা করা সম্ভবপর হয়েছে। সদস্য প্রশাসন উপসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী পরিচালনা বোর্ড সভায় যুক্ত সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সভাপতির অনুমতিক্রমে সদস্য প্রশাসন উপসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বিগত পরিচালনা বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
সভায় সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বোর্ডের আওতাধীন কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এবং পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্প/স্কিমসমূহের ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে সার্বিক অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়া বোর্ডের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে তিন পার্বত্য জেলার অংশে অন্তর্ভূক্তিকরণ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ ও সৃজন, রাঙ্গামাটি শৈল বিপনী বিতানের ৪৫টি দোকানের ভাড়া ও জামানত পুনঃনির্ধারণ, অবতরণ জেটিঘাট নির্মাণ, কমিটির সুপারিশক্রমে বোর্ডের রাবার বাগানের মেয়াদ উত্তীর্ণ রাবার গাছগুলো কর্তন ও বিকল্প জীবিকা ব্যবস্থাকরণ, হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণ, তিন পার্বত্য জেলার প্রবেশমুখে শ্লোগান সমৃদ্ধ তিনটি ফলক নির্মাণ, মডেল পাড়াকেন্দ্র নির্মাণ, পার্বত্য জেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় সাধন করে প্রকল্প/স্কিম গ্রহণ ও দ্বৈত্যতা পরিহার এবং দুর্গম ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় প্রকল্প/স্কিম গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
তিন পার্বত্য জেলায় হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণের গুরুত্ব বিষয়ে জেলা প্রশাসকগণ জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে হেডম্যান কার্যালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ হেডম্যানদের নিজস্ব কোন কার্যালয় নেই। তাই দাপ্তরিক কাজের গতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে খাসভুক্ত জমি বন্দোবস্তির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তিন পার্বত্য জেলায় প্রবেশমুখে শ্লোগান সমৃদ্ধ তিনটি ফলক নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে নির্বাহী প্রকৌশলীগণ জানান, ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচনসহ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার কর্তৃক গণপূর্ত কাজ স্থগতি রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। পরবর্তীতে নির্দেশনা শিথিল করা হলে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে মর্মে সভাকে অবহিত করেন।
অনলাইন জুমে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সরকারের যুগ্মসচিব আশীষ কুমার বড়–য়া, সদস্য পরিকল্পনা ও সদস্য প্রশাসন উপসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, সদস্য-বাস্তবায়ন উপসচিব মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি কাজী মোখলেছুর রহমান, রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক জনাব প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক জনাব ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব এ টি এম কাউছার আহমেদ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল হক ভুঁঞা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
এছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আবদুল আজিজ, খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুল আলম, জনাব মংছেনলাইন রাখাইন, উপ পরিচালক, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, বান্দরবান ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম, তুষিত চাকম, রাঙ্গামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব), কাইংওয়াই ম্রো, গবেষণা কর্মকর্তা, সাগর পাল, সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), মিজ ডজী ত্রিপুরা তথ্য কর্মকর্তাসহ বোর্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ যুক্ত ছিলেন।