শিরোনাম
বুধ. ডিসে ২৫, ২০২৪

কমলার বাড়িতে ইফতার সামগ্রী ও খাবার পাঠালো সরকারী কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক:: স্বামী ছেড়ে গেছে ২০/২১ বছর আগে। সেই থেকেই স্বামী নিরুদ্দেশ, কোথায় আছে কেউ জানেনা। একমাত্র ছেলেও বিয়ে করে মাকে ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছে বেশ ক‘বছর আগে। সেই থেকে স্বামী-সন্তানহীন কমলা খাতুনের মাথা গোঁজার ঠিকানা হয়েছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী তবলছড়ির গৌরাঙপাড়ার বাপের বাড়িতে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাপের বাড়িতেই একটি জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস কমলা খাতুনের। ঘরের চার পাশে মাটির দেয়াল থাকলে উপরে ছনের চাউনি। ঘরের চালার অনেক জায়গায় ছন নেই। দিনে সুর্য্যরে আলো আর রাতের চাঁদের আলো তার ঘরের চালাকে ভেদ করে ঘরে প্রবেশ করে। বর্ষাকালে তো কষ্টের শেষ থাকনো স্বামী পরিত্যাক্ত আর সন্তানহীন কমলা খাতুনের। বাইরে বৃষ্টি পড়ার আগেই তার ঘরের ভেতরে বৃষ্টির পানিতে ছুপসে যায়। স্বামী-সন্তান ফিরবে এমন আশায় ভাঙা ঘরে অভাবের সাথে বছরের পর বছর ধরে লড়াই করছেন তিনি।

অভাবের সংসার, স্বামী-সন্তান নেই। ভাঙা ঘরে অতিকষ্টে দিন পার করেন তিনি। নুন আনতে পানতা পুরায় অবস্থা। খেয়ে না খেয়ে ভাঙা ঘরেই দিন কাটে তার। পবিত্র রমজান মাসে প্রতিবেশীরা যখন মুখরোচক খাবারে সেহরী ও ইফতার করেন তখন অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইফতার-সেহরী করেন কমলা খাতুন।

রোববার (১৮ এপ্রিল) বিকালের দিকে ‘এদের দেখার মত কেউ নেই’ শিরোনামে কিছু ছবি নিজের ফেসবুকে আপলোড করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. আবু তালেব। মুহুর্তের মধ্যেই এসব ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। আর তখনই সকলের নজরে আসে স্বামী-সন্তানহীন কমলা খাতুনের দু:খ কষ্টের দৃশ্যপট।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কমলা খাতুনের এমন দুর্ভোগের কথা জানতে পেরে তাঁর বাড়িতে চাল, ডাল, তেল, পেয়াজ-রসুন, ছনা, মুড়ি ও খেজুরসহ রোজার মাসের খাবার পাঠালেন মাটিরাঙার এক পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তার পক্ষে মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) বিকালের দিকে রোজা এবং ঈদের খাদ্য সামগ্রী কমলা খাতুনের বাড়িতে পৌছে দেন মাটিরাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান ভুইয়া। এসময় মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. আবু তালেব, মেহেদী হাসান ও স্থানীয় শরীফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ওই কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. আবু তালেব জাগোনিউজকে বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তা কতোটা মানবিক হতে পারে তিনি সে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। নিজের পরিচয় গোপন করে তিনি উদারতার পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে রোজার মাসে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ওই সরকারী কর্মকর্তার জন্য দু’হাত তুলে দোয়া করে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে কমলা খাতুন বলেন, রমজান মাসে আমাকে আর কষ্ট করতে হবেনা। প্রতিবেশীদের বাড়িতে নয় নিজের ঘরেই সেহরী ও ইফতার করতে পারবো।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!