শিরোনাম
বুধ. ডিসে ২৫, ২০২৪

কাল রামগড় হানাদার মুক্ত দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক:: আগামীকাল ৮ ডিসেম্বর প্রতিবছরের মতো এবারও খাগড়াছড়ির রামগড়ে হানাদার মুক্ত দিবস পালন করা হবে। তবে করোনার কারনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে উপজেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষে রামগড় পর্যটন পার্কে স্থাপিত বিজয় ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় রামগড় উপজেলার ক্যাম্প অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বহু নারীকে ধর্ষণসহ হাজার হাজার নিরীহ জনসাধারণকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

রামগড়ের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে গেরিলা কৌশলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গোটা বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল, তার মধ্যে ১ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চলে রামগড় ছিল অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর।

দীর্ঘ ৯ মাসের সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের পর পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পতনের পর ৮ ডিসেম্বর মরহুম সুলতান আহাম্মদ নেতৃত্বে রামগড়ের প্রধান ডাকঘরে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

‍৭১-এর এই দিনে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় রামগড় উপজেলা। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় শেষের দিকে ৬ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনীর গেরিলা আক্রমণ ও ভারতীয় যুদ্ধ বিমান থেকে রামগড়ের শত্রু ঘাঁটিতে প্রবলভাবে বোমাবর্ষণ হলে পাক সেনারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রামগড় ছাড়তে শুরু করে।

৮ ডিসেম্বর ’৭১ পুরোপুরি শত্রুমুক্ত হয় রামগড়। ওই সময় আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা রামগড় মহকুমা কেন্দ্রীক মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক মরহুম সুলতান আহমেদ মুক্তিপাগল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় শরণার্থী শিবির সাবরুম মহকুমার কাঁঠালছড়ি থেকে বাংলাদেশের পতাকা রামগড় এনে উত্তোলন করেন।

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হেমদা রঞ্চন ত্রিপুরা, সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা ও মিন্টু চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ চারিতায় জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই উত্তাল দিনগুলোতে রামগড়ের মানুষ গড়ে তুলেছিল সংগ্রাম কমিটি। রামগড় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৭১-এর ১৬ মার্চ রামগড় বাজারের বনবীথি বোর্ডিংয়ে এই কমিটি গঠনের জন্য এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মরহুম কাজী রুহুল আমীনকে আহবায়ক ও প্রয়াত সাংবাদিক সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরাকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।

এই কমিটির অন্য সদস্যদের কয়েকজন হলেন, সুরেশ মোহন ত্রিপুরা (অবসর প্রাপ্ত জেলা তথ্য কর্মকর্তা), বনবীথির মালিক মংলাগ্য মারমা, আজিজুর রহমান, যতীন্দ্র কুমার নাথ, কংচাই চেীধুরী (হেডম্যান)। কমিটি গঠনের পর পরই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!