নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি জেলার অনিয়ম অপকর্মের গড ফাদার কংজরী চৌধুরী। ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকেই তাঁর অনিয়ম, দুর্নীতিসহ সকল অপকর্মের তথ্য জনসম্মুখে উঠে আসছে প্রতিনিয়ত। তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে গুইমারাসহ জেলা বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে অসংখ্য। কিন্তু এখনো রয়েছে সে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। ইতিমধ্যেই রাঙামাটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও বিভিন্ন অবৈধভাবে আয় করা অর্থ ও সম্পদের হিসাব ২১ দিনের ভিতর দাখিল করার নিদের্শনা প্রদান করেছে।
একটি সূত্র জানায়, খাগড়াছড়ি জেলার যত অপকর্মের মুল হোতা কংজরী চৌধুরী আওয়ামীলীগের দুঃশ্বাসন আমলে বিভিন্ন অনিয়ন দূর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি গুইমারায় ছিলো তার বিলাসবহুল বাড়িসহ অপকর্মের কেন্দ্রবিন্দু। র্দীঘদিন যাবৎ গুইমারা টাউন হল দখল করে অর্থের বিনিময় ঠিকাদারদের ভাড়া দিয়েছিলো। ক্ষমতার দাপটের কারনে তা পূর্বে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করতে না পারলেও বর্তমানে টাউন হলটি প্রশাসনের দায়িত্বে এসেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে যাত্রীছাউনি দখল, ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে যেখানে সেখানে দোকানপাট নির্মাণ, জেলা পরিষদের বরাদ্দে নির্মিত বানিজ্যিক সেট পরিচালনায় অনিয়ম, বিপুল অর্থের বিনিময় প্লট বরাদ্দ, বাজারে পানি সাপ্লাইয়ে অনিয়ম, চাকরি দেওয়ার নাম করে অসংখ্য লোকদের থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ।
তার এতসকল অপকর্মের বাহিরেও রয়েছে তার একটি সহযোগি দুষ্টচক্র মহল। যারা তার এসকল অপকর্মকে বৈধ করতে সবসময় আন্তরিক সহযোগিতা করে এসেছিলো। তারা হচ্ছে গুইমারা বাজার ব্যবসায়ী সাবেক কমিটির বিভিন্ন সদস্যরা। অনিয়ম আর দুর্নীতি করে যতটাকা আত্মসাৎ করা হতো তার ৪০ শতাংশ ভাগ তারাই পেতো। যা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করা সম্ভব বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সর্বপরি পরিতাপের বিষয় এই যে কংজরী চৌধুরীর পলাতক হলেও তার দলপল এখনো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গুইমারা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায়। নামে বেনামে চাঁদাবাজী করেই বেড়াচ্ছে তারা। দোকান পাট, স্থাপনা, ফুটপাতসহ সকল কিছুই আগের মতই দখল করে বহাল তবিয়তে রয়েছে কংজরীর দুষ্টচক্র মহল। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের।
সম্প্রতি রাঙামাটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কংজরী চৌধুরীর সকল অর্থ ও সম্পদের হিসাব চেয়ে একটি নোটিশ প্রেরণ করেছেন। উক্ত নোটিশে বলা হয়েছে- প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে দুদকের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, আপনারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ/সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। নিজ ও আপনাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির নামে-বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী কমিশনে দাখিল করবেন। তবে সম্পদের হিসাব জমা দিতে ২১ কর্মদিবস বেঁধে দিলেও চাইলে সময়ের আবেদন করে ১৫ কর্মদিবস সময় বৃদ্ধি করতে পারবে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা।