ছানোয়ার হোসেন, মহালছড়ি: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার প্রাচীন থানা মহালছড়ি। ১৯০৬ খ্রিঃ থানা এবং পরবর্তীতে ১৯৮২ সনে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কার্যক্রম শুরু হয়।
মহালছড়ি থেকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ফায়ার স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ২৪ কিলোমিটার। কাছাকাছি ফায়ার স্টেশন না থাকায় উপজেলায় কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দ্রুত আগুন নেভানো সম্ভব হয় না। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
সর্বশেষ উপজেলার মহালছড়ি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু আগুন নেভানোর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীদের চোখের সামনে প্রায় পুরো বাজার পুড়ে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে অথবা বাজারে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার আগেই সব পুড়ে যায়। মহালছড়ি প্রশাসন বলছে পূর্বে অতিরিক্ত অগ্নিকাণ্ডে মহালছড়ি বাজারে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে কোটি টাকার।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখনো কাজ হয়নি। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়ে যাচ্ছে। মহালছড়ি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মোঃ জুয়েল রানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার অভাবে জেলার প্রাচীন উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা সদরের বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সোনীল বাবু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দাবি জানিয়ে আসছি। ফায়ার স্টেশনের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধনও করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো কাজ হয়নি। প্রতিবছর আগুনে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসত।’
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তারা বলেন, খাগড়াছড়ি থেকে মহালছড়ি উপজেলা সদরের দূরত্ব ,২৪ কিলোমিটারেরও বেশি। এ ছাড়া সরু ও আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তায় গন্তব্যে পৌঁছাতে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লেগে যায়। সে কারণে মহালছড়িতে কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সব পুড়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচন করা হয়ে গেছে এবং গত সরকারের আমলে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে ভূমি সমস্যার কারণে স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ-সংক্রান্ত সব নথিপত্র ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।