শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:: পবিত্র ঈদুল আযহা’কে সামনে রেখে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। কোরবানির সময় যত ঘনিয়ে আসছে উপজেলার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় ততই বাড়ছে।

এদিকে উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৩শত ৮৮টি গবাদি পশু।

গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির পরও কোরবানির পশুর দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। তাছাড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয় মাটিরাঙ্গার পশু।

শনিবার (৮ জুন) মাটিরাঙ্গা গরু বাজার ঘুরে দেখা যায়, বড় জাতের গরুগুলো নির্দিষ্ট খুঁটিতে বাঁধা রয়েছে। মাঝারি ও ছোট আকারের অনেক গরু বাজারে নিয়ে আসছেন খামারি ও গৃহস্থরা। অত্র উপজেলায় ছোট-বড় কয়েকটা খামার রয়েছে। অন্যগুলো গৃহস্থের। এদের দাম আকার অনুযায়ী ৫০ হাজার থেকে শুরু হয়ে মাঝারি আকারের গরুর দাম দেড় লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। বড় গরু সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হ‌য়ে‌ছে।

অপর দিকে অনেক ছাগল বাজারে দেখা যায়। সামর্থ্য-বান অনেকে গরুর পাশাপাশি খাসি ছাগল দিয়েও কোরবানি দিয়ে থাকেন। বড় আকারের এক একটি খাসি ছাগল ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলছেন বিক্রেতারা। সে ক্ষেত্রে ২৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হ‌য়ে‌ছে।

মাটিরাঙ্গা সদরসহ অত্র উপজেলার বেলছড়ি, গোমতী, শান্তিপুর, রামশিরা, বড়নাল, তবলছড়ি,ও তাইন্দং বাজারে নিজেদের সুবিধাজনক দিনে কোরবানির পশুর হাট বসে। স্থানীয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পশু ব্যবসায়ী ও কোরবানি-দাতা গণ এসব বাজার থেকে গরু, ছাগল ক্রয় করে থাকেন। দেশী গরুর কদর বেশী হওয়ায় এসব স্থান থেকে পশু ক্রয় বিক্রয়ে আগ্রহ বেশী অনেকের। সে কারণে কোরবানির ঠিক কাছাকাছি সময়ে দাম থাকে চড়া, আর তখন পশুর সংকটও দেখা দেয়।

গত বছরের তুলনায় এ বছরের কোরবানির চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। নিজেদের আর্থিক দুরবস্থার কারণে অনেকে কোরবানি দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া নিত্য-পণ্যের দাম বেশী হওয়ার কারণে কোরবানিতে ক্রেতার সংখ্যা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জনবল কম থাকার দরুন অত্র উপজেলার ৮টি বাজারে ৪টি মেডিকেল টিম কাজ করবে, তারা সুস্থ ও অসুস্থ পশু চিহ্নিতকরণের কাজে নিয়োজিত থাকবে।

এবার প্রায় দুই হাজার পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এ বছর কোরবানি-দাতার সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমবেশি হতে পারে বলে সূত্র জানায়।

গো-খাদ্যের দাম বেশি বিধায় গরু পালনের খরচ বেড়ে গেছে জানিয়ে স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, এ বছর যথেষ্ট পরিমাণ গরু ছাগলের সমাগম হচ্ছে। এতে পশুর উপযুক্ত দাম না পেলে লোকসান গুনতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

চট্টগ্রামের গরু ব্যবসায়ী মো. জানান, আমরা রীতিমতো এ উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে গরু ক্রয় করে থাকি। গতবারের তুলনায় দাম একটু কম। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতিও ভালো। দালালের কোনো ঝামেলা নেই। নিজেদের চাহিদা মোতাবেক গরু ক্রয় করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

গরু কিনতে আসা মাটিরাঙ্গা সিএনজি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বর্তমান সভাপতি মো. আব্দুস সোবহান বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কোরবানি দিতে গরু কিনছি দাম বড় কথা নয়। তবে এই বাজারে গরুর দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই আছে বলে মনে করেন তিনি।

মাটিরাঙ্গা বাজারের ইজারাদার বাবলু বলেন, মাটিরাঙ্গায় কোরবানির পশু বিক্রি মোটামুটি। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন।

মাটিরাঙ্গার পশু দিয়েই নিজেদের কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুমেন চাকমা জানান, কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে উপজেলায় প্রায় ৪৩৮৮টি পশু মজুদ রয়েছে। পশুর হাটে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মেডিক্যাল টিম ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন।

মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃঞ্চ ধর জানান, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে কোরবানির হাটে ক্রেতা বিক্রেতা নির্বিঘ্নে ক্রয়-বিক্রয় করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!