নিজস্ব প্রতিবেদক:: বান্দরবানের লাইমি পাড়া এলাকায় বেইলি ব্রিজ দেবে যাওয়ায় বান্দরবানের রুমা ও থানচি সড়কে ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে সব ধরনের ভারী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে প্রভাব পড়েছে পার্বত্য জেলার বান্দরবানেও। টানা দুইদিন ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবান-রুমা ও থানচি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বান্দরবান থেকে দুই উপজেলার মূল সড়কের বেইলি ব্রিজ দেবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের বন্ধ রয়েছে। তবে ছোট পিকআপ, সিএনজি, মোটরবাইক চলাচল করতে পারলেও বন্ধ রয়েছে ভারি যানবাহনগুলো। যার ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মে থেকে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিপাত ও সাথে হালকা থেকে মাঝারি আকারের ঝড়ো হাওয়া বইছে। গতকাল সকাল থেকে দমকা হাওয়ায় বয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এতে মিলনছড়ি পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন বান্দরবানে দুই উপজেলার সড়কের পাঁচ কিলো স্থানে বেইলি ব্রিজের গাইড ওয়াল ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্রিজটি দেবে যায়। এতে সড়কের ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য মতে, বান্দরবানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে জেলায় অতি ভারী বর্ষণের জনিত কারণে পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধ্বসের সম্ভাবনা থাকার কথা জানান আবহাওয়া অফিস।
এদিকে ভারি বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ার ফলে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ লাইনে গাছ ভেঙে পড়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেলা সদর, থানচি ও রুমায় উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মাঠে কাজ করছেন বিদ্যুতে কর্মচারীরা। তবে এই পর্যন্ত পাহাড় ধ্বসের কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবানে হতে বেইলি ব্রিজের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। বেশ দীর্ঘ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে সেই ব্রিজ দিয়ে চলাচল করেন ভারী, ছোট-বড়সহ সাধারণ মানুষ। গতকাল ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর মাটির নরম হয়ে একপাশে বেধে যায়। ব্রিজের নিচে গাইডওয়াল ভেঙ্গে যাওয়াই ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা।
রুমা ও থানচি বাসের যাত্রীবাহী নুরুল ও অংথোয়াই বলেন, সকালে কাজের উদ্দেশ্য বান্দরবান যাচ্ছিলাম। কিন্তু পৌঁছার আগে ব্রিজ দেবে যাওয়ায় গাড়ি চলাচলে বন্ধ রয়েছে। এই বৃষ্টিতে আমাদের হেঁটে যেতে হচ্ছে। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।
থানচি বাস মালিক সমিতির লাইন ম্যান সাহাব উদ্দীন বলেন, বান্দরবান চিম্বুক সড়কে পাঁচ কিলোতে ব্রিজ দেবে যাওয়াই সকাল থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে রুমা-থানচিতে সকল প্রকার ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে ২৬ ইসিবি ওয়ারেন্ট অফিসার সোহেলের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে জেলায় এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের কোন ক্ষয়-ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।