নুরুল আলম:: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের শিশুদের জন্য শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। আগামী প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ করে ২০৪১ সালে একটি সুন্দর জাতি উপহার দেয়ার জন্যই জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ।
রবিবার (১৭ মার্চ) খাগড়াছড়ি জেলা সদরের টাউন হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, জাতীয় শিশু দিবস জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। এ প্রজন্মকে শক্তিশালী রূপে গড়ে তোলার দায়িত্ব আপনার, আমার সবার। তিনি শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনগুলোর সুদৃশ্য পাকা বিল্ডিং, বাউন্ডারি ওয়ালসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্কুলের ক্যাম্পাসের ভিতরে খেলাধুলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবার তথ্য প্রযুক্তির সাথে শিশুদের পরিচয় করিয়ে দিতে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাপটপ দিয়ে শিশুদের সুশিক্ষিত করার প্রয়াস চালিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠিত করে শিশুদের মনোবাসনা ও চিন্তা চেতনা বিকশিত করার সুযোগ করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি আরও বলেন, দেশে সুশাসন কায়েম করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। আর তা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দুরদর্শীতা এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর প্রেম ও ভালবাসার কারণে।
প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল আরও বলেন, এখন আমাদের দরকার সম্প্রীতি। আরও দরকার আমরা যে যেখানেই থাকি, সেখান থেকেই দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বারংবার জাগ্রত করা। এভাবে যদি আমরা এগুতে পারি, তাহলে সামনের ২০৩০ এর এসডিজি অর্জনে আমরা সফল হবোই এবং ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না বলে মন্তব্য করেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
সমাজের নিন্দুক শ্রেণির মানুষদের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, নিন্দুকেরা সবসময় নিন্দা করবেই। যারা নিন্দুক তাদের কাছে কোনো জাত নাই, এমনকি নাই কোনো সম্প্রদায় ধর্ম। যারা কুচক্রকারী, ষড়যন্ত্রকারী, যারা দুর্বৃত্তকারী তারা তাদের দুর্বৃত্তায়ন কাজ করেই যাবে। এই দুর্বৃত্তশ্রেণি ও হায়েনারা স্বাধীনতা সংগ্রামে নিরীহ মানুষের সীমাহীন ক্ষতি করেছিল। দেশের মানুষকে দ্বিধা দ্বন্দের মধ্যে রেখেছিল। সমাজের এধরনের দুর্বৃত্ত শ্রেণি ও হায়েনাদের কাছ থেকে নিজেদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, অনুরূপভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা চান আজকের শিশু আগামীতে দেশ পরিচালনায় অনন্য ভূমিকা পালন করবে। সে লক্ষ্য অর্জনে শিশুদের স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে উন্নত নাগরিক হিসেবে বড় করে তোলার পরিবেশ করে দেওয়ার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, পুলিশ সুপার মুক্তা ধর ও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, শফিকুল ইসলাম ফারুক, দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার দে, উপ দপ্তর সম্পাদক নুরুল আযম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শতরুপা চাকমা, সদর উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি সনজিত ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় দাস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শানে আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনা আক্তার, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগ আহ্বায়ক সুইচিং থুই মারমা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম ইসমাইল হোসেন, যুবমহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বিউটি রানি ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদিকা বিলকিস চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জেলা প্রশাসন, দলীয় সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে নিয়ে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গনে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।