রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে
নুরুল আলম:: রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের দুই সদস্য নিহত হয়েছে।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ব্রিজ পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করে সাজেক থানা পুলিশ। নিহতরা হলেন, দীপায়ন চাকমা এবং অপরজন আশিষ চাকমা।
সাজেক থানার সার্কেল এএসপি ও রাঙামাটির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের দুইজন নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পরপরই সাজেক থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এদিকে আগামী ১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের আবকাশ যাপনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সাজেক যাওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের মূলে কারা রয়েছে এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে ইউপিডিএফের দাবী জেএসএস সন্তু লারমা লোকজন এই হত্যার সঙ্গে জড়িত।
ইউপিডিএফ’র অভিযোগ অস্বীকার করে জেএসএস সন্তু লারমা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা বলেন, সাজেক এলাকায় জেএসএসের কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। ইউপিডিএফ’র এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মিয়ানমারে সংঘর্ষ
মিয়ানমারের ছোড়া গুলিতে বাংলাদেশি ২ নাগরিক আহত
বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু সীমান্তে ওপারে মিয়ানমারের জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে এপারে বাংলাদেশে প্রদীর চন্দ্র ধরসহ দুই ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে খবর দেওয়া পাওয়া গেছে।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহত দুজনেই হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা। গোলাগুলিতে কোনাপাড়ার কয়েকটি ঘর—বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল গভীর রাত তিনটা থেকে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে তুমব্রু সীমান্তে। যার ফলে সীমান্তে বসবাসরত সাধারণ মানুষ আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছে। শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে মিয়ানমারে ছোঁড়া মর্টারশেল এসে পড়ে তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার ইউনুছ ওরফে ভুলুর বাড়িতে টিন ছিদ্র হয়ে মর্টারশেলটি ভিতরে এসে পড়ে। ঘরের ভেতরে পরিবারের সদস্যরা না থাকায় কেউ হতাহত হয়নি । একই দিনে দুপুরে তুমব্রুর উত্তর পাড়ার রাস্তায় চলাচলকারী অটো সিএনজিতে এসে পড়ে মিয়ামনারের ছোড়া বুলেট। এতে গাড়ির সামনের গ্লাসটি ফেটে যায়। এতে সীমান্তে বসবাসরত সাধারণ মানুষরা আতঙ্কের রয়েছে।
এদিকে গোলাগুলি ও সংঘর্ষে প্রাণহানির শঙ্কায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড বিজিপির ১৪ জনের মতন বেশকিছু সদস্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের ব্যবহৃত পোশাক ও অস্ত্র বাংলাদেশের বিজিবি হেফাজতের রাখা হয়েছে। তবে তাঁদের প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের বিজিপির সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জানা গেছে, সীমান্তের উত্তেজনা বিরাজ হওয়ার ফলে ঘুমধুম সীমান্তে থাকা ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। তারমধ্যে সীমান্ত এলাকার বাইশ ফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজা বনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মিশকাতুন নবী দাখিল মাদরাসা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
নাইক্ষ্যছড়ি উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমা জানান, গতকাল রাত থেকে সীমান্তে ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে সীমান্তে থাকা শিক্ষার্থীরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্রস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্তবর্তী আতঙ্কিত হওয়ার ফলে প্রাথমিকভাবে ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনাটি পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।