নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রবিউল আলম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল দীঘিনালা। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি। এতে অংশ নেন গ্রামবাসীও। সমাবেশ থেকে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, হরতাল চলাকালে গত ২০ নভেম্বর (সোমবার) বিকালে জেলার দীঘিনালায় সন্ত্রাসী হামলায় দিঘীনালা উপজেলা মেরুং উত্তর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রবিউল আলমের বাড়িতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘর ভাংচুর করে ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রবিউল আলমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। ২৬ দিন পর গতকাল শনিবার (১৬ সিম্বেবর) রাত পৌনে ১১টায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবীর সব মায়া ত্যাগ করেন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার মুবিনুল হক জানান, শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে রবিউল আলম মারা গেছেন। রবিবার দুপুরে রবিউলের লাশ ময়না তদন্তের পর স্বজনরদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, রবিউল এক সন্তানের জনক। তার স্ত্রী অন্তসত্ত্বা। কিন্তু রবিউল তার অনাগত সন্তানের মুখ না দেখেই পরপাড়ে চলে গেছেন।
এদিকে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রবিউল আলম হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে দীঘিনালায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাসুদ রানা ও দীঘিনালা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ এ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। সমাবেশ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেন বক্তারা।
এ সময় দীঘিনালা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম, সহ-দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন মুহিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক বাবুল হোসেন বাবলু, দিঘীনালা কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মোস্তফা কামালসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির নেতা মাসুদ রানা জানান, পুলিশ মিছিলে বাধা দিয়েছে। তবে মামলা করলে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক এম এন আবছারের অভিযোগ গত ২০ নভেম্বর (সোমবার) বিকালে জেলার দীঘিনালায় সন্ত্রাসী হামলায় দিঘীনালা উপজেলা মেরুং উত্তর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রবিউল আলমের বাড়িতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তার বাড়িঘর ভাংচুর করে ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রবিউল আলমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। রবিউল চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে তাকে রিলিজ দিলে দলীয় ও স্বজনরা তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।
তবে এ বিষয়ে দিঘীনালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাসেমকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা করার কথা জানিয়েছেন রবিউল আলমের মামা ফজলুল কবির রনি।
এ নিয়ে হরতাল-অবরোধে খাগড়াছড়িতে দুই জনের প্রাণ গেল। এর আগে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় সরকারি চালবাহী ট্রাকে অগ্নি-সংযোগের ঘটনায় দগ্ধ ট্রাক চালকের সহকারী বেলাল হোসেন (৩৫) শনিবার (২ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থেকে মারা যান। অবরোধ চলাকালে গত (২৭ নভেম্বর) ভোরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি এলাকায় অবরোধকারীরা ট্রাকে দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে তিনি দগ্ধ হন।