শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

মাটিরাঙ্গায় অর্থের অপচয় করে পাহাড়ের ওপর ঘাটলা নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:: পুকুরের নেই অস্থিত্ব, নেই চলাচলের রাস্তাও। তারপরও নির্মাণ করা হয়েছে পুকুরের ঘাটলা। এমন ঘটনাটি ঘটেছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায়। মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নে এমন ২টি ঘাটলা করা হয়েছে পাহাড়ের ওপর। বিষয়টি অবাক করার মত হলেও সত্য। পুকুর না থাকায় ঘাটলাগুলো কোনই জনকল্যাণে কাজে আসছে না। এতে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকার অপচয় হয়েছে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিকরা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে এমন তুঘলকিকাণ্ড ঘটলেও কোন ধরনের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে সাংবাদিদের দিকে তেড়ে আসেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী।

সারাদেশে পুকুর ও খাল উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে জিওবি‘র অর্থায়নে ২০২০-২১ অর্থ বছরে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নে ৪টি পুকুর খনন ও ঘাটলা নির্মাণ করে এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ)। তারমধ্যে মাটিরাযার আব্বাস সর্দারপাড়া জামে মসজিদ ও আমতলী আদর্শপাড়া মসজিদের নামীয় ঘাটলা দুটি কোনই কাজে আসছে না। আব্বাস সর্দারপাড়া জামে মসজিদের নামে যে ঘাটলা নির্মাণ করা হয়; সেখানে মানুষ যাওয়ার রাস্তা পর্যন্ত নেই। ঘাটলাটি করা হয়েছে পাহাড়ের ওপর। যেখানে স্থানীয় একটি বকর স্থান রয়েছে। এখানে নেই পুকুরের অস্তিত্ব। মূলত: দুই পাহাড়ের মাঝের গ্যাপকে পুকুর দেখিয়ে এখানে ঘাটলা বৈধ করা হয়। এছাড়া আমতলী আদর্শপাড়া মসজিদের নামীয় ঘাটলাটিরও একই অবস্থা। ঘাটলায় উঠার পথই নেই। ঘাটলার সামনে পুকুর বলতে কিছুই নেই। তবে প্রায় ৫০ মিটার দূরে হাটু পানি দেখা যায়।

আদর্শপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি এমরান হোসেন ও আব্বাস আলী সর্দার পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি রহুল আমীন জানান, ঘাটলাগুলো জনকল্যাণে কাজে আসছে না। এগুলো উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি ছাড়া কিছু নয়।

জানা গেছে, দরপত্র অনুযায়ী কাজটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিদাকারী প্রতিষ্ঠান। তবে এই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। কাজটি কিনে নিয়ে করেছিলেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আলী। তিনি জানান, কার্যাদেশ দেয়া কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ এলজিইডি যেখানে দেখিয়ে দিয়েছে সেখানেই তিনি ঘাটলা তৈরি করেছেন।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এমন ঘটনা সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারের অর্থ ব্যয়ে অপ্রয়োজনীয় স্থানে কেন ঘাটলা তৈরি করা হলো তা খতিয়ে দেখা হবে।

জানা যায়, ২০১৯ সালে ডিজিটাল সার্ভে হয়। প্রকল্প অনুমোদনের পর টেন্ডার করা হয়। তবে কত টাকায় এসব কাজ হয়েছে জানাতে রাজি নয় এলজিইডি‘র কোন কর্মকর্তা।

এদিকে ঘাটলা নির্মাণে আদৌ সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি হননি মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজাহান। বরং ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অনুরোধ করায় ক্ষেপে উঠেন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন উপজেলা প্রকৌশলী।

 

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!