বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিদ্যানন্দের উদ্যোগে
নুরুল আলম:: সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “এক টাকায় বাজার”নামের এক ব্যাতিক্রমী মানবিক সহায়তা দেয়া হয়েছে খাগড়াছড়িতে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকাল ১০ টায় খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ মাঠে ভিন্ন এই বাজারের উদ্বোধন করেন,খাগড়াছড়ি ২০৩ পদাতিক ব্রিগেড এবং রিজিয়ন কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মোঃ আমান হাসান, এসপিপি, এনডিসি, পিএসসি।
এই বাজারে প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১ টাকায়! চাল ডাল, আটা, তেল,ডিম,মাছ মুরগী, কাপড়, শিক্ষা উপকরণ সহ ১৯ ধরনের পণ্যের মধ্যে থেকে বাছাই করে অনধিক ৭ টি পণ্য বাছাই করে নিতে পারছেন যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৮০০ টাকা।
এতে ২ ডজন ডিম যেমন ১ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ঠিক তেমনি ১ টি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ টাকায়। খাগড়াছড়ি,দীঘিনালা, পানছড়ি ও মহালছড়ির বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার মোট ৫০০ পরিবার এই সুবিধা পাচ্ছেন।
প্রধান অথিতির বক্তৃতায় খাগড়াছড়ির দূর্গম এলাকাসহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সতায়তার হাত বাড়ানো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও খাগড়াছড়ি সদর জোনের এ মহতি উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়ে প্রশংসা করে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার আমান হাসান বলেন, দূর্যোগে সাধারন মানুষের কল্যাণে কাজ করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। সকল জাতি-ধর্মের মানুষ এ সহায়তার অংশিদার।
তিনি আরো বলেন, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন বন্যা দূর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এসময় তিনি নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বন্যা কবলিতদের পাশে থেকে যারা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীতেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাশাপাশি জনকল্যাণকর কাজে সবধরনের সহযোগিতা দেয়ার কথা জানান তিনি।
এতে তিনি আগামীতেও দূর্গম এলাকায়ও এ ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে তাদের মানবিক কাজে আত্মনিয়োগে সহযোগিতা থাকবে বলে জানান।
এতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন “দেশের যেকোন দুর্যোগে প্রতিবেশির পরিচয়ে দুর্গত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। বর্তমানে বন্যা দুর্গত ৮টি জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবকরা।
খাগড়াছড়িতে ২১ আগস্ট থেকে আজ অবধি স্বেচ্ছাসেবকরা ত্রান কাজ করে যাচ্ছে। পাশপাশি অতি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে বিদ্যানন্দ পুনর্বাসন করে যাচ্ছে” বলে তিনি জানান।
পানছড়ি থেকে আসা লাকি ত্রিপুরা বলেন” বন্যায় ঘরবাড়ি সব ঢুবে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়ি। বাচ্চাকে পছন্দের মুরগীর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারিনি মেলা দিন। আজ বাজার থেকে ১ টাকায় মুরগী কিনে বাচ্চাকে মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াব”।
খাগড়াছড়ি,দীঘিনালা, পানছড়ি ও মহালছড়ির বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবকরা উপকারভোগিদের মাঝে টোকেন বিতরণ করে। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নারী,দিনমজুর,কৃষক ও বিধবাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন,খাগড়াছড়ি (৩০ বীর) খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল হাসনাত জুয়েল, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার মো; জামাল উদ্দিন প্রমূখ এতে অংশ নেন।