“খাগড়াছড়িতে ডিসি অফিস ঘেরাও”
অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি পুলিশ সুপারের
নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাতাছড়ায় গণধর্ষন ও তিন পার্বত্য জেলায় সংগঠিত ধর্ষনের বিচার ও ধর্ষকদের গ্রেপ্তারে ৫ দিনের আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়ে আন্দোলনকারী। সোমবার (২৭ আগস্ট ২০২৪) সকাল ১১টার দিকে ধর্ষনের চেষ্টা-গণধর্ষনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীসহ ৮ দফা দাবীতে মিছিল বের করে সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
খাগড়াছড়ি কলেজ গেইট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চেঙ্গি এস্কয়ার থেকে শাপলা চত্বরসহ প্রধান প্রধান প্রদক্ষিণ করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে আন্দোলনরতরা। বিক্ষোভে হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এতে বিক্ষুদ্ধরা খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাও করলে তাৎক্ষণিক খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান,পুলিশ সুপার মুক্তাধরসহ প্রশাসনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত হন।
পরে আন্দোলনকারীদের দাবীর মূখে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আন্দোলনকারীরা ৫ দিনের সময় বেঁধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিতে প্রশাসেনর সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন তারা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা চেঙ্গি এস্কয়ারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন,শিক্ষার্থী হিতার্থ চাকমা,সুকন চাকমা, তোশিতা চাকমা প্রমুখ। এতে রাঙ্গামাটিতে পৃথক ধর্ষন চেষ্টাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানানো হয়। সমাবেশ থেকে ৮দফাদাবী উত্তাপন করে সমাবেশে সমাপ্ত করে।
দাবী সমূহ- (১) বাংলাদেশের ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিসহ সকল গ্রেডের চাকরিতে ৫% আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। (২) আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে এবং এনসিটিবি’র পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। (৩) “সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন” -এর সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে নির্দলীয়,সৎ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা এবং গত বিশ বছরের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দুর্নীতি তদন্তপূর্বক যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
(৪) অবিলম্বে পাহাড়ের ভূমি সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং ১৯০০ রেগুলেশন বহাল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (৫) পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি পূর্বক আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জেলা পরিষদের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
(৬) ক্রীড়াঙ্গনে দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মাদকমুক্ত যুব সমাজ গড়তে ক্রীড়া খাতে সরকারি অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। (৭) পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ প্রদান এবং প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মানবন্টনে মাতৃভাষা পারদর্শীতা যাচাই করার জন্য একটি অংশ যুক্ত করতে হবে। (৮) পার্বত্য চট্টগ্রামকে সরকারি বা বেসরকারি কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর “পানিশমেন্ট জোন” হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং চাকরির ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থানীয়দের পদায়ন নিশ্চিত করার দাবী জানান সমাবেশ থেকে।