নুরুল আলম: রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে লাখো মানুষ। ফলে কাপ্তাই হ্রদে নির্ভরশীল কর্মসংস্থানে থাকা লোকজন বেকার হয়ে পড়েছে। এছাড়া কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ইতোমধ্যে হ্রদের ওপর নির্ভরশীল মৎস্য উৎপাদন, জল বিদ্যুৎ, কার্গোসহ সকল ধরনের কাঁচামাল পারাপার টলি, পর্যটনসহ সকল ক্ষেত্রে ধ্বস নেমেছে। এছাড়া এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় নৌ-যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে অভাব অনটন।
কাপ্তাই হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ার ফলে নৌকা ও অনেক ইঞ্জিন চালিত বোট কূলে আটকে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে বাঁশ ব্যবসায়ীদের। কোন বাঁশ কাপ্তাই নৌ পথে একস্থান থেকে অন্যস্থানে পরিবহন করতে পারছে না।
বাঁশ ব্যবসায়ী শুক্কুর জানান, কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিকভাবে পানি কমে যাওয়ায় কোটি টাকার বাঁশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
গাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক জানান, পানি কমে যাওয়ার ফলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। হ্রদ কেন্দ্রীক বিভিন্ন কাজে জড়িত হাজার লোকের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেছে।
ডিঙ্গি নৌকা ও সাম্পান মাঝি রুবেল জানান, গত ১ মাস যাবত কোন কাজ নেই। ঘরে বসে আছি। কষ্টে সংসার চলছে।
কাপ্তাই বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস জানান, পানি কমে যাওয়ায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি যাতায়াতে যাত্রী কমে গেছে।বিলাইছড়ি যাওয়া যায়না। হ্রদ এখন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার মাঠ হয়েছে। নিয়মিত বিকাল হলে স্থানীয়রা বিভিন্ন খেলায় মেতে উঠে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক এটি এম আব্দুজ্জাহের জানান, পানি অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন চরমভাবে হ্রাস পেয়েছে। ৫টির ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১টি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে। কাপ্তাই লেক ড্রেজিং করা অতি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তবে সামনে বর্ষা মৌসুমে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হলে সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেও জানান।