শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

রামগড়ে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র জামে মসজিদ নিয়ে নানা বির্তক

মসজিদ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান চায় সাধারণ মুসল্লি ও স্থানীয় এলাকাবাসী

নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার সরকারি প্রতিষ্ঠান পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জায়গায় নির্মিত জামে মসজিদটি অবৈধ দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় একটি মহল। পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জায়গায় নির্মিত মসজিদটি রামগড় উপজেলার দ্বিতীয় জামে মসজিদ হিসেবে ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বলে জানায় স্থানীয়রা।

জানা যায়, খাগড়াছড়ি জেলা কানুনগো, রামগড় সিএইচটি রিপ্রেজেনটেটিভ অব এসডিও (আর) অফিসার মার্কেটিং ওবার পজেশন ৩ জানুয়ারী ১৯৬৪ ৫০.০৯ একর ১৯ আগস্ট ১৯৬৪ ১৩৩.১৬ একর এবং ২৭ মার্চ ১৯৬৫ ২০.৩০ একরসহ সর্বমোট ২০৩.০০ একর ভূমি (তৎমধ্যে ১৫.৯৯ একর সেটেল্ড ল্যান্ড) অত্র কেন্দ্রের নামে অধিগ্রহণ পূর্বক হস্তান্তর করা হয়। তারই চলমান প্রক্রিয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি), রামগড়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা এর বন্দোবস্তি মামলা নং- ০১/রাম/২০১১-২০২ তারিখ-১৪/০৬/২০১২ মোতাবেক অন্যান্য দাগ ও ১৫৯৩ দাগসহ সর্বমোট ১৫২.১৬ একর ভূমি মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, জয়দেবপুর, গাজীপুর এর নামে নামজারী করা হয়। যাহার খাজনা পর্যন্ত পরিশোধ করা রয়েছে।

গত ৭ আগস্ট ২০১৭ জায়গাটি দখল পূর্বক ভূয়া কাগজপত্র জালিয়াতী করে স্থানীয় কমিশনারসহ কয়েকজন লোক ১৫৯৩ দাগের ভূমির মধ্যে ১.০০ (এক) একর ভূমি মাস্টারপাড়া জামে মসজিদের নামে ১৯৮১ সালে বন্দোবস্তি কাগজ দাখিল করেন। যার কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করেন রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম ফয়সাল।

সাংবাদিকদের এক সাক্ষাৎকারে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম ফয়সাল বলেন, মসজিদটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। সরকারি দায়িত্ব পাললের উদ্দেশ্যে যা করণীয় তাই করছি। এখানে আমার কোনো ব্যক্তিগথ স্বার্থকতা নেই। তবে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে অবৈধ দখলের চেষ্টাকারীরা যে কাগজপত্র দেখিয়েছে তা সম্পূর্ণ জালিয়াতীর মাধ্যমে ভূয়া কাগজ দেখিয়েছেন। কাগজপত্রগুলোতে জায়গাটির দাগ নাম্বারই উল্লেখ নেই। এছাড়াও পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণার রেস্ট হাউসসহ অন্যান্য স্থাপনায় তারা প্রবেশ করে যত্রতত্র আনাগোনা করতো এবং রেস্ট হাউসে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ও রাত্রীযাপন করত। আমি আসার পর এসব কর্মকান্ড বন্ধ করি। যার ফলে স্থানীয় নেতাদের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এসময় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রকিবুল হাসান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুনিল কান্তি নাথও উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে জাফর আহম্মদ ও মোশাররফ হোসেন জেলা প্রশাসকের নিকট মাস্টার পাড়া জামে মসজিদের জায়গাটি তাদের নির্মিত বলে দাবি করে মসজিদের গেইটে ব্যানার টাংগিয়ে দেয়।

১৩ মার্চ ২০২৪ সরেজমিনের পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উক্ত মাস্টার পাড়া জামে মসজিদ লিখা ব্যানারটি আগের স্থানে নেই। দুই চৌহুদ্দির মধ্যে ১ম চৌহুদ্দির ১ একর ভূমিতে পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র জামে মসজিদ অবস্থিত এবং ২য় চৌহুদ্দির ৪ একর ভূমি রামগড় ইউনিয়ন এ অত্র মসজিদে টিলাভূমি অবস্থিত। তবে স্থানীয় জাফর আহাম্মদ ও মোশাররফ হোসেন জায়গাটি তাদের রের্কডীয় জায়গা বলে দাবি করলেও স্পষ্ট কোনো স্থান নির্ধারণ করে বলে নাই।

এবিষয় রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী বক্তব্য নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে ফোন করলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে এক বৈঠকে জেলা প্রশাসক সহিদুজ্জামান বলেন, জায়গাটি মুসলিমদের নামাজের জায়গা। এখানে দাঙ্গা-হামলা কিংবা একে অপরকে হয়রানী করার কোনো কারণ দেখছি না। এখানে সবাই একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করবেন। তবে যদি জায়গাটি কেউ জালিয়াতী করে নিজেদের নাম করতে চায় তাও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!