নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির গুইমারায় থামছেইনা পাহাড় খেকোদের দৌরাত্ম। জেলার সবচেয়ে বেশি পাহাড় নিধন করা হয়েছে গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বছরের পর বছর নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পাহাড় কাঠার মহোৎসবে ছোট-বড় মিলিয়ে অর্ধশত পাহাড় নিধন হয়েছে। আরো পাহাড় নিধন করার পায়তারা চলছে। পাহাড়খেকোরা একটি বিশেষ মহলের ছত্রছায়ায় পাহাড় কাটলেও ব্যবস্থা নেয়না প্রশাসন।
পাহাড়খেকো চক্রটি প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় কাটলেও প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে পাহাড় কাটা এমন অভিযোগ সচেতন মহলের। স্থানীয় নির্মাণ ও উন্নয়নের অযুহাতে গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক, মুসলিমপাড়া, তৈকর্মা, হাতিমুড়া, বাইল্যাছড়ি, ছোটপিলাক, চিংগুলিপাড়া, গুইমারা সরকারি কলেজ সংলগ্ন পাহাড়সহ উপজেলার অর্ধশত পাহাড় কাটা হয়েছে। পাহাড়ের এসব মাটি ইটভাটা ও স্থানীয় বাড়ীঘর নির্মাণে বিক্রি হয়। প্রতি গাড়ি মাটির মুল্যপনেরশত টাকা থেকে দুই হাজার টাকায়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ধারা ৬ এর (খ) এ বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধা-সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাবে না। তবুও থামছেনা পাহাড় খেকোদের দৌরাত্ম। পাহাড় কাটার কারনে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুইমারা থানার পাশেই লুন্দুক্যাপাড়ায় সুুউচ্ছ পাহাড় কাটা হচ্ছে। জানা যায়, এ জমির মালিক আনিসুল হক। টাকার বিনিময়ে তিনি পাহাড়টি কাটতে দিয়েছেন। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর দুটি ব্যানার টানিয়ে এই পাহাড় কাটা বন্ধ করেছিলেন ইউনও রাজিব চেীধুরী। একটি ব্যানার এখনও টানানো আছে। পাহাড়ের গায়ে লাগানো ব্যানারটি সরিয়ে ফেলে মাটি কাটা হচ্ছে। এমন ভাবেই পাহাড় কাটা হচ্ছে যেকোনো সময় ধ্বসে পরতে পারে বৈদ্যুতিক পিলার।
গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমি জানি। গুইমারা মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য এই পাহাড়টি কাটা হচ্ছে। মডেল মসজদি ছাড়া অন্য কোথাও মাটি দিতে পারবেননা এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে যদি মডেল মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও মাটি বিক্রি করে তাহলে জেল জরিমানা করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে আইন অমান্য করে পাহাড় কাটা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী বলেন, পাহাড় কাটা বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। এ কারনে প্রতিদিন পাহাড় কাটার প্রবনতা বাড়ছে। গুইমারা উপজেলা ঘোষনা হওয়ার পর পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ প্রয়োগ হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
খাগড়াছড়িতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অফিস নেই। গুইমারা উপজেলার অর্ধশত পাহাড় কাটার বিষয়ে কথা হয় পরিবেশ অধিপ্তরের উপপরিচালক (চট্রগ্রাম) মো: ফেরদৌস আনোয়ারের সাথে তিনি বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে আমরা সবসময় কঠোর অবস্থানে আছি। বিভিন্ন সময় পরিবেশ অধিদপ্তর পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে মামলা করে পাহাড় কাটা বন্ধ করছে।