খাগড়াছড়িতে বেপরোয়া পাহাড় খেকোরা
নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়িতে পরিবেশ আইন না মেনে দেদারছে চলছে পাহাড় কাটা। বাড়ি নির্মাণ, রাস্তা সংস্কার ও ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজের জন্য পাহাড় কাটছে একটি চক্র। পাহাড়ের মাটি কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। দিনে পাহাড় কাটা হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা।
গত কয়েক বছর ধরে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি। বিনা বাধায় পাহাড় খেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পরিবেশ সুরক্ষা আইন লঙ্গন করে খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রাতের আঁধারে চলছে পাহাড় কর্তন। এসব পাহাড়ের মাটি চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে প্রতি রাতে চলছে পাহাড় কর্তন। সারা রাত চলে মাটি পরিবহন।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ‘বুলডোজার দিয়ে পুরোটা পাহাড়ের উপরিভাগ কয়েকটি লেয়ারে কাটা হয়েছে। পাহাড়ে কোথাও সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই। পাহাড়ের কাটা মাটি পড়ে আশপাশের জলাশয়ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েক লক্ষ ঘনফুট মাটি কেটে সাবাড় করে দেয়া হয়েছে। এসব মাটি বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ কাজ করা হচ্ছে। এখানে প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই করলেই হুমকি ধামকিসহ নানান সমস্যার সম্মূখিন হতে হয়। তারা আরো বলেন, রাতের আঁধারে বুলডোজার দিয়ে এখানে মাটি কাটা হয়। রাতেই তা পরিবহন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরাতে প্রভাবশালী একটি মহল বুলডোজার ও স্কেভেটর দিয়ে অবাধে পাহাড় কেটে তা ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। এসব অবৈধ কাজ সাধারণত রাত ১১টার পর পাহাড় কাটা শুরু করে এবং ফজরের আজানের আগেই শেষ করে। এসব পাহাড় কাটায় একটি সিন্ডিকেট জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সচেতন মহল জানান, “অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। প্রশাসনিকভাবে পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দেদারছে চলছে পাহাড় কাটা। অবিলম্বে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা না গেলে ভয়াবহ পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।”