সড়কে যানজটের ভোগান্তিতে হাজারও পথযাত্রী
এনামুল হক, মাটিরাঙ্গা:: খাগড়াছড়ির গুইমারা মাটিরাঙ্গা ও তিনটহরী বাজার ফুটপাত দখল করে সড়কে যানজটে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে একদল অসাদু ব্যবসায়ী। খাগড়াছড়ির গুইমারা বাজারের বেশির ভাগ ফুটপাত দিয়ে হাঁটার কোন উপায় নেই। খাগড়াছড়ি-চট্রগ্রাম সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে গড়ে উঠেছে ব্যবসায়ীদের বেশকিছু অবৈধ দোকান-স্থাপনা। আর ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় পথচারীরা বাধ্য হন রাস্তায় নেমে চলতে। যত্রতত্র ট্রাক, পিকাপ, জিপ গাড়ি পার্কিং তো রয়েছেই। এর উপর রয়েছে ব্যবসায়ীদের গ্যাস সিলিন্ডার, পিলার, পানির ট্যাংক, লোহার বিভিন্ন মালামাল, চারা ব্যবসায়ীর গাছ, আখসহ চায়ের দোকান ও খড়ির স্তুপ। আবার অনেক দোকানের মালামালও ফুটপাতে ঠাঁই পেয়েছে।
এতে করে তীব্র যানজট নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এ এলাকায় । এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও স্কুল-মাদরাসাগামী ছাত্রছাত্রীরা।
মানিকছড়ির তিনট্যহরী, মাটিরাঙ্গা ও গুইমারা সড়কের পাশেই অবস্থীত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজিয়েট উচ্চ বিদয়ালয়সহ রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের একটি আবাসিক স্থাপনা। এছাড়াও পাশাপাশি রয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফুটপাত অবৈধ দখলে থাকার কারণে বিদ্যালয় গামী শিক্ষার্থীরা চলতে হয় মূল সড়ক দিয়ে। যানজটের ভোগান্তিতে পড়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগিরা। অথচ ফুটপাত দখল করে দীর্ঘ কাল ব্যবসা করছে ব্যবসায়ীরা।
সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার হাটবার। বেশ লোকসমাগম হয় এ বাজারে। বাজারটি বেশ পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী বাজার। হাটবারে দূর দূরান্তের পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষি পণ্যসহ নানান কিছু বিক্রি করতে আসা লোকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাড়াঁতে হয় মূল সড়কের পাশে। আবার বেপারিদের ক্রয়কৃত পণ্যও রাখতে হয় মূল সড়কের পাশে। মূল সড়কের পাশে পার্কিং করে পণ্য বোঝাই করতে হয় ট্রাক বা পিকাপে। এ কারণে হাটবারে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে। সড়ক ও ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত রাখতে অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সেগুলো যাতে দখল না হয়, সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগীরা।
জেলার মাটিরাঙ্গা, খাগড়াছড়ি, পানছছড়ি, দীঘিনালা উপজেলার লোকজনের জন্য চট্টগ্রাম ও ঢাকা যাতায়াতের একমাত্র সড়ক হিসেবে ব্যবহার করতে হয় মহাসড়কটি। যার কারণে জরুরি চিকিৎসাগামী রোগীসহ যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় অন্য উপজেলার লোকজনকে। এছাড়াও মাটিরাঙ্গা হয়ে তবলছড়ির সড়কের ফুটপাতেও দেখা যায় একই চিত্র। বাজারের দুইপাশ দখল করে নিয়মনীতি অমান্য করে গাড়ি পাকিং সহ ফল ও কাঁচামাল বিক্রয়ের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি মহল। এতে করে প্রতিদিন যাতায়াত করা হাজার হাজার পথচারী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে। দিন দিন বাড়ছে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরের দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
অপরদিকে মানিকছড়ি তিনট্যহরী মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে ফলমুল, শাকসবজিসহ যাবতীয় খুচরা বিক্রয়ের এক মহাৎসব চলছে। স্থানীয় সচেতন মহল এসব ব্যবসায়ীদের নিদ্রিষ্ট স্থানে বিক্রয়ের জন্য অনুরোধ করলে তা মানছে না ব্যবসায়ী চক্রটি। এমনকি প্রশাসনও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারী ও কমলমতি শিক্ষার্থীদের। সচেতন মহল বলেন, এভাবে চলতে থাকলে সড়ক দূর্ঘটনার দিনদিন বৃদ্ধি পাবে। তাই দ্রুত এই ফুটপাত দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষিকা বলেন, ফুটপাত নাগরিকদের হাঁটার সুবিধার্থে তৈরি হলেও ফুটপাতে মানুষের হাঁটা এখন দুঃসাধ্য এক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে নির্মাণসামগ্রী রাখা এবং ফুটপাত দখল করে পসরা সাজিয়ে বসা, এটা যেন তাদের নিজস্ব এক নিয়মেই পরিণত হয়েছে। তিনি আশা করছেন উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এর একটি সমাধান হবে।
এবিষয়ে জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ফুটপাত দখল আর যানজট নিরসনে জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।