নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন এর বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডারবিহীন বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে ও গাছগাছালি কেটে সাবাড় করে ফেলেছে এই প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ। আত্মীয়করণের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অনিয়ম।
সম্প্রতি সরকারি টেন্ডার ও অনুমতি বিহীন ১ দিনের নোটিশে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের নাম করে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ও গাছগাছালি কেটে সাবাড় করে ফেলেছে হাফছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন। পরে, ভবন ভাঙ্গা লোহা, ইট ও গাছ-গাছালি গুলো বিক্রয়ের জন্য নিলামের ডাক দেওয়া হলে কোনো এক অদৃশ্য কারণে সেই নিলাম বাতিল করা হয়।
জানা যায়, পুরাতন ভবন ভাঙ্গার পর যেসব লোহা, টিন, ইট ও গাছ পাওয়া গেছে সেগুলো প্রায় অর্ধেক জিনিস সিন্ডিকেটের নিকট বিক্রয় করে হাতিয়ে নিয়েছে অর্থ। তার অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে অতিষ্ট স্থানীয়রা। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারি নিয়োগে আত্মীয়করণের অভিযোগ উঠেছিল।
এই বিষয়ে বিদ্যালয়টির সিনিয়র সহকারি শিক্ষক কাজী আব্দুস সালাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভবন ভেঙ্গে যেসব ইট, টিন ও লোহা পেয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগই বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কিছু সংখ্যাক টিন ও লোহা বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন এর নিকট বিক্রয় করা হয়েছে। তবে কতটুকু টিন বিক্রয় করা হয়েছে তা জানা নেই। ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের সরকারি বই বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে সহকারি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
টিন ও গাছ বিক্রয়ের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, টিন, কাঠ ও লোহা গুলো বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাশে থাকা আমার বাড়ি ভাঙ্গার পর যেসকল টিন পেয়েছি সেগুলো বিক্রয় করেছি। ইট যেগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো বিদ্যালয়ের সামনেই স্তুপ করা রয়েছে। আর গাছ বিক্রয়ের ১৩ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে আছে বলে তিনি জানান। এছাড়াও বই বিক্রয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি জানতাম না, পরে শুনেছি আমার অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ পুরাতন বই বিক্রয় করতে চেয়েছিল পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জানতে পারলে বিক্রয় কাজে তারা বাধাঁ দেয়। বইগুলো বর্তমানে কোথায় আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
সম্প্রতি হাফছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাহাড়টি কাটার জন্য তড়িঘড়ি করলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারনে কাটতে পারেনি পাহাড়টি। তাই নতুন করে পাহাড়টি কাটার বিভিন্ন পায়তারা করছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এলাকার কিছু পাহাড় খেকো চক্র।
সচেতন মহল বলেন, সরকারি নিয়ম অমান্য করে কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারি টেন্ডার ও অনুমতি বিহীন বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে যে অপরাধ করেছে সেই অপরাধের মাসুল এখন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভোগ করছে। অতিরিক্ত তাপদাহের মধ্যে যেখানে এক ব্যাঞ্চে ৩জন করে বসতে হবে, সেখানে ৫-৬জন গাদা-গাদি করে বসতে হচ্ছে অব্যবস্থাপনার কারণে। এর আগেও হাফছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তাই এর সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।