নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ৯টি উপজেলাতে কোরবানির পশু বেচাকেনার ধুম পড়েছে। আর মাত্র ৪দিন পরই দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজ্হা। তাই সবাই নিজ সামর্থ্যের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু কিনতে ছুটছেন হাট-বাজারে। এখন পছন্দের পশু কেনাই যেন সবার কাছে মুখ্য কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্য বছরের মতো এবারও পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ি থেকে বিপুল সংখ্যক গরু চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী যাচ্ছে। এখানকার পশুর হাটে সমতল জেলার ব্যাপারীদের ব্যাপক আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা পাহাড়ি অঞ্চল ঘুরে ঘুরেও গরু কিনছেন। আর প্রতিদিনই ট্রাকবোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন সমতলের জেলাগুলোতে। কেননা অন্যান্য জেলা থেকে কিছুটা কম দামে গরু পাওয়া যায় এই পার্বত্য অঞ্চলে।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্য বছরের তুলনায় এবছর দেশি জাতের পাহাড়ি গরুর দাম কিছুটা বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে ৫০হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি গরু। ছোট আকারের গরু ৫০থেকে ৭০হাজার, মাঝারি গরু ৭০থেকে এক লাখ টাকা আর বড় আকারের গরু লাখ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় তাইন্দং, শান্তিপুর ও গোমতি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বিভিন্ন আকারের গরুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। হাটে পাশের চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লার ও নোয়াখালী থেকে আসা ব্যাপারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এছাড়াও খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলা প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার বসে বড় বাজার। ঈদুল আয্হাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই ব্যপক হারে বেড়েছে গরু ক্রয় বিক্রয়। গুইমারা গরু বাজারে কানায় কানায় ভরে গেছে ছোট-বড়-মাঝারি গরু আর ক্রেতা বিক্রেতাদের সমাগম।
এছাড়া মানিকছড়ির তিনটহরীতেও দেখা যায় একই চিত্র। আসপাশের এলাকা থেকে প্রাকৃতভাবে পালিত দেশি গরু নিয়ে হাজির হচ্ছেন খামারিরা। বাজারে ব্যপক গরু থাকায় ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী গরু নিয়ে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন।
কোরবানির গরু কিনতে ফেনী থেকে আসা ব্যবসায়ী বলেন, দাম একটু বেশি হলেও পাহাড়ের দেশি গরুতেই আমার আস্থা। আর তাই এত দূর থেকে ছুটে এসেছি নিজের পছন্দের কোরবানির পশুটি ক্রয় করতে।
খাগড়াছড়ির গরু সমতলের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার কারণে এখানকার বাজারে দাম চড়া বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে দাম চড়া হলেও তার কোরবানির প্রথম পছন্দ পাহাড়ের দেশি গরু।
গরু বিক্রি করতে আসা স্থানীয় কৃষক ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ধরনের ওষুধ ব্যবহার না করে প্রাকৃতিকভাবে এখানকার গরু পালন করা হয়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার কারণেই কোরবানির জন্য সমতলের জেলাগুলোতে পাহাড়ের এসব দেশি গরুর বেশ কদর রয়েছে। ফলে প্রতি বছরের মতো এবারও সমতল থেকে বহু ক্রেতা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পশুর হাটে আসেন। আবার অনেকেই এখান থেকে পশু কিনে সমতলে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠান।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, এখানকার গরু কোনো ধরনের মোটাতাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। তাই সমতলের লোকজনের কাছে খাগড়াছড়িসহ পাহাড়ের দেশি জাতের গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।