নিজস্ব প্রতিবেদক:: সরকার অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পরও খাগড়াছড়ির গুইমারাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ ছাড়াই বালু উত্তোলন করায় নদীর, খাল ও ছড়ার পাড় ভাঙ্গন, ব্রিজ, কালভার্ট, ফসলি জমির ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসকল অবৈধ কাজে জড়িয়ে রয়েছেন কিছু দুষ্টুচক্ররা। এসকল বালু বিক্রয়কারী চক্র সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে দিনে রাতে বালু উত্তোলন করে বালু বিক্রির মহা উৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। এ বালু উত্তোলন নির্দিধায় চালিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি মহলকে ম্যানেজ করে এ চক্রটি। যাতে তারা তাদের অবৈধ বালু ব্যবসা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়া চালিয়ে যেতে পারে।
খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার বাইল্যাছড়ি, তৈকর্মা, সিন্দুকছড়ি ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে ফসলি-জমি, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষতি সাধন হচ্ছে। এছাড়াও মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, লক্ষীছড়ি, পানছড়ি, দিঘীনালা, রামগড় থলিবাড়িসহ খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় অবৈধ ভাবে খাল থেকে লক্ষ লক্ষ ফুট বালু উত্তোলন করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে একটি সিন্ডিকেট।
এ সিন্ডিকেট চক্র খাল গুলো থেকে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এতেই তারা খান্ত নয়, কেটে নিচ্ছে খালের ও ছড়ার দুই পাড়। এদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, অন্যদিকে বর্ষার ভরা মৌসুমে খালের ভাঙ্গন আগ্রাসী রূপ ধারণ করে, ফলে বিপজ্জনক হয়ে পড়ে খাল পাড়ে বসবাসরত ছিন্নমূল মানুষ গুলোর জন্য।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বর্ষা মৌসুমে খালের দু’ধার ভেঙ্গে ফসলি জমি গুলো খালের গর্তে পতিত হয়। বিগত কয়েক বছরে প্রায় দুইশত একর জমি খালের ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে।
স্থানীয় এক কৃষক বলেন, বালু খেকোদের এমন আগ্রাসী কান্ডে আমরা খালপাড়ে বসবাসরত কৃষকরা ভয় ও উৎকন্ঠায় থাকি। কারণ, একদিকে আমাদের বসত বাড়ি যেমন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তেমনি ফসলের জমি গুলো খালের ভাঙ্গনে বর্ষায় হারিয়ে যাচ্ছে।
বালু উত্তোলন বন্ধে এ বিষয় নিয়ে বারবার সংবাদ প্রকাশ করলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
এ বিষয়ে গুইমারা থানার অফিসার ইনর্চাজ রাজিব চন্দ্র কর এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি গুইমারা উপজেলাতে নতুন যোগদান করেছি। কোথায় কোথায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে আমার জানা নেই। তবে কেউ অনুমতি ছাড়া অবৈধ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা সভায় এক বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রক্তিম চৌধুরী বলেন, পাহাড় কাটা ও বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। পাহাড় কাটলে ও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বলেন অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করতে হবে। এসময় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।