নুরুল আলম:: পার্বত্য খাগড়াছড়ির গুইমারা থানার আঙিনায় পতিত জায়গায় সবজি চাষ করছেন থানার অফিসার ইনর্চাজ মুহাম্মদ রশিদ। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের হাতে সবজি বাগানের পরিচর্যা করেন তিনি। থানার অন্য সদস্যরাও তাকে সহযোগিতা করেন। শুধু সবজি নয়, পাহাড়ি বন-জঙ্গলে মোড়ানো প্রায় পাঁচ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তুলেছেন ফলজ বাগানও।
সম্প্রতি গুইমারা থানা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মাচাংয়ে ঝুলছে বিভিন্ন সাইজের লাউ। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে শিম, বরবটি, ঝিঙে, কাঁচামরিচ, বেগুন, শসা, কলমী শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। সবুজের মাঝে ভিন্ন রূপ ধারণ করেছে লাল শাক। আছে টমেটো আর দেশী ধনেপাতা। এত সবুজের মাঝে হলুদ রং ছড়িয়ে নিজের আগমনের খবর জানান দিচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। এছাড়াও ফলজ গাছ রয়েছে ১৪ প্রকার। যার মধ্যে আম রয়েছে ১৫ জাতের, পেঁপে, কলা, লেবু, মাল্টা, বরই, ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরী, লটকন, সাজনা, পেয়ারা, সফেদা, নাসপাতি, সুপারী সহ ২১ প্রকারের মৌসুমী সবজি ও ১প্রকার ফুল রয়েছে।
সবজির নিয়মিত পরিচর্যা করা কনস্টেবল মো. আতিকুর রহমান বলেন, ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে অবসর সময়ে সবজি ও ফলের বাগানে পরিচর্যা করি। বাড়তি পরিশ্রম হলেও আমরা সবাই উৎসাহ নিয়েই কাজ করি। এখানকার মাটি উর্বর, একটু পরিচর্চায়ই ভালো ফলন পাওয়া যায়।
থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বলেন, সবজি বাগানের সামনে দাঁড়ালে মনে হয় নিজের বাড়িতেই আছি। নিজেদের হাতেই ক্ষেত থেকে লাউ, শাক, কুমড়া তুলে খাওয়ার যে স্বাদ সেটা আমরা সবাই উপভোগ করি।
গুইমারা থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মুহাম্মদ রশিদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, এক ইঞ্চি জায়গাও যেন খালি কিংবা পতিত না থাকে। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা আর খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপারের নির্দেশে যোগদানের একমাস না যেতেই থানার আঙিনার ফাঁকা জায়গায় বিষমুক্ত সবজি চাষ করছি। থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের ৫০ শতাংশ সবজির চাহিদা এখান থেকে পূরণ হচ্ছে। পাশাপাশি থানা কমপাউন্ডজুড়ে অন্তত ৩৫ জাতের ফলের বাগান গড়ে তোলার কাজ চলছে।” আগামিতে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যদেরকে দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবো বলে আসা করছি।
উদ্যোগ, ইচ্ছাশক্তি ও সঠিক পরিকল্পনাই পারে মানুষকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে। তারই বাস্তব চিত্র অনুধাবন পর্যবেক্ষণে গুইমারা থানা। গুইমারা থানার ওসি মুহাম্মদ রশিদ ঘুরেঘুরে তার সাজানো বাগান ও নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা জানালো, এক সময় গুইমারা থানার আশে পাশে অনেক বন- জঙ্গলে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল, উদ্যোগ ও পরিকল্পনার বাস্তব রুপ দিয়ে সেই পড়ে থাকা জরাজীর্ণ বন- জঙ্গলকে বানিয়েছেন বিভিন্ন প্রকারের সবজি ও ফলের বাগান। কাজের হাজারও ব্যস্ততার ফাঁকে একটু সময় পেলেই গিয়ে সময় দেন তার তৈরি করা সবজি ও ফলের বাগানে। তার এই ফলজ বাগান দেখতে প্রতিদিনই ছুটে যায় দুরদুরান্ত থেকে আসা মানুষ।