নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ৩নং যোগ্যাছোলা ইউপি’র সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকায় নতুন নির্মিত ঘর থেকে প্রবাসী মো. সাজ্জাদ হোসেন’র (২৪) গলা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর এই নৃশংস্য ঘটনার ক্লু উদঘাটনে নিহতের কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাই মো. মোস্তাফিজুর রহমান, নিকটাত্মীয় মো. আবু বকর ও প্রতিবেশি সিএনজি চালক মো. ফারুক হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে (সন্দেহবশত) থানায় নিয়েছে পুলিশ। নিহত সাজ্জাদ এলাকার মো. মাসুদ রানার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , উপজেলার ৩নং যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের কালাপানি মৌজার সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকার মো. মাসুদ রানার ২ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে সাজ্জাদ জ্যেষ্ঠ। ৫ থেকে ৭ বছর ধরে সাজ্জাদ হোসেন কাতার প্রবাসী। সম্প্রতি বাড়িতে এসে বিয়ে-সাদীর উদ্দেশ্যে পিতার পুরাতন ঘর-দুয়ার ভেঙ্গে নতুন সেমি পাকা ঘর তৈরির আগে পিতা-মাতাকে বাড়ির অদূরে নানার বাড়িতে রেগে ঘর নির্মাণ করছিল। ইতোমধ্যে ঘর নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্মাণ চলাকালীন সাজ্জাদ আদরের ছোট ভাইকে নিয়ে বাড়িতেই রাত্রীযাপন করত।
গত কয়েকদিনে আগে সাজ্জাদের নিকটাত্মীয় মো. আবু বকর বেড়াতে আসলে ছোট ভাইসহ প্রতিবেশি যুবক (সিএনজি চালক) মো. ফারুক হোসেন একসাথে আড্ডা ও ঘুমাত!
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার পর মোবাইল রিচার্জের কথা বলে প্রথমে মো. আবু বকর ও মো. ফারুক হোসেন দোকানে যায়। এর কিছুক্ষণ পর নিহতের ছোট ভাই মোস্তাফিজও দোকানে যায় এবং কিছুক্ষণ পর ঘরে ফিরে আসে। ঘরে এসে দেখেন সাজ্জাদ শয়ন কক্ষে রক্তাক্ত! এ দৃশ্য দেখে মোস্তাফিজ আর্তচিৎকার দিলে লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পরে খবর পেয়ে মানিকছড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রবাসী সাজাদের গলাকাটা নিথর দেহ উদ্ধার করেন।
পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রবাসীর রহস্যাবৃত ঘটনার তথ্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। তবে ঘটনার আগে নিহতের ছোট ভাই ও অন্য দুই যুবক ঘর থেকে দোকানে চলে যাওয়া এবং নিহতের ছোট ভাই ঘর থেকে সবার পরে বের হয়ে যাওয়া এবং সবার আগে ঘরে এসে লাশ দেখার বিবরণে গরমিল থাকায় তাদেরকে সন্দেহবশত থানায় আনা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার খবর জানাজানির পর নিহতের পিতা-মাতা, বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে মাসুদ রানা আত্মবোলা হয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন।