শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ২৬, ২০২৪

পাহাড়ে বর্ণিল সাজে শান্তিচুক্তি’র রজত জয়ন্তী উদযাপন


আল-মামুন, খাগড়াছড়ি:: বর্ণিল সাজে নানা আয়োজনে পাহাড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি (২ ডিসেম্বর)র রজত জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। শান্তি-সম্প্রীতির মেল বন্ধনে চুক্তির বর্ষপূর্তিতে একে অপরের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে পাহাড়ের মানুষ।

খাগড়াছড়িতে সকালে সাড়ে আটটার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাহাড়ি চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা তরুণী, শিশুসহ সকল বয়সিরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গয়না দিয়ে সেজে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে। নেচে-গেয়ে শোভাযাত্রাকে মাতিয়ে রাখেন তরুণীরা। এসময় সবুজ প্রকৃতিসহ বিভিন্ন রঙ ঝলমল হয়ে উঠে চারপাশের পরিবেশ।

ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির রজত জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে শোভাযাত্রা বের করে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ। এ সময় শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোরর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ দিনের সংঘাত বন্ধ করার জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমাতায় আসেন তখন এটাকে একটি রাজনৈতিক সমস্যা চিহৃত করে। ১৯৯৭ সালের ২’রা ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়। শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর আজ ২৫ বছর পূর্তি হলো।

তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা এক সময় কি ছিল। চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম কি হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি আমরা আশা করি নাই। পার্বত্য চট্টগ্রামে আজ আমরা শান্তিতে বসবাস করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি, সম্প্রতি, উন্নতি অব্যাহত রাখার জন্য সকলের ঐক্যবন্ধ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহন হওয়ার পর আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা তাঁর প্রেম ছিল বলেই এই পার্বত্য শান্তি চুক্তি হয়েছে। শান্তি চুক্তির সকলেই সুফল পাচ্ছি উপভোগ করছি। এই ধারাকে আমরা অব্যহত রাখতে চাই। অশান্তি আর চাই না।

এসময় খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র নিমলেন্দু চৌধুরী,সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার,উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শানে আলম,জেলা পরিষদ সদস্য মাইন উদ্দিন,নিলোৎপল খীসা,খোকনেশ^র ত্রিপুরাসহ জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পরিষদ মাঠ থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে টাউনহল প্রাঙ্গনে গিয়ে আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। আলোচনা সভার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক প্রদান, কেক কাটা ও বর্ণিল ডিসপ্লে ও অলোচনাসভা অনুষ্টিত হয়।

আয়োজকরা জানান, বিকেলে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সম্প্রীতি কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছে। মঞ্চ মাতাতে থাকবেন মমতাজ, হৃদয় খান, নাজমা সুইটি, প্রীতমসহ স্থানীয় শিল্পীরা। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জলন, আতশবাজি ও ফানুস উত্তোলন করা হবে বলে জানান।

উল্লেখ্য, ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের উপস্থিতিতে সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের তৎকালীন চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল আলাহ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির পক্ষে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!