নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ উঠেছে নুর আলম (৩০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ২৮ নভেম্বর সোমবার বিকালে উপজেলার করল্যাছড়ি বাজার এলাকায় এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শি আমতলী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার আ: আব্দুল খালেক বলেন, সোমবার আছরের পরে করল্যাছড়ি বাজারে যাওয়ার সময় লোক জনের ভীড় দেখে সামনে গিয়ে দেখি নুর আলম তার স্ত্রী হাছিনা বেগম ও শ্যালক শরিফ উদ্দিন (১৪) কে এলোপাথারি কিল ঘুষি মারছে । হাছিনা অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে আছে। আমার ও চার দিক থেকে মানুষের উপস্থিতিতে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তার পাশে রেখে নুর আলম বাজারের দিকে চলে যায়। পরে আমি তাদের বড় ভাই জামাল হোসেন কে ফোন করে জানালে তিনি এসে তাদের উদ্ধার করে অজ্ঞান অবস্থায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাই বোন দুই জনকে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগি হাছিনা আক্তার (২৫)দর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৮ নং আমতলীর ইউনিয়নের ৪নংওয়ার্ড করল্যাছড়ি বাজারপাড়া এলাকার বাসিন্দ আরব আলীর ছেলে নুর আলম প্রকাশ মালু মিয়ার সাথে একই ইউনিয়নের ৫ ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনসুর আলীর মেয়ে হাছিনা আক্তারের সাথে ২০১৬ সালে সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। হাছিনা বাবা একজন চা দোকানদার।
৬ বছর দাম্পত্য জীবনে তাদের (হাছিনা- নুর আলম) মারিয়া নামে সাড়ে চার বছর বয়ষী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় সাধ্যমত স্বর্ণ,ফার্ণিচার,ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়ছে। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নয় মেয়ের জামাই। সব সময় টাকা জন্য মারধর করেন। জামাইয়ের টাকার চাহিদা মিটাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়েছে মেয়ের বাবা। টাকার জন্য ইতি পুর্বে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী হাছিনার শরীরের বিভিন্ন জায়ায় ক্ষত বিক্ষত করেছে স্বামী নুর আলম। পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করে টাকা উপার্জনের জন্য চাপ সৃষ্টির কারণে শুধু মাত্র টাকার জন্য ৫বছর বিবাহিত জীবনে ৩বছর ধরে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন হাছিনা। গত ২ মাস আগে চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় চট্টগ্রাম ভাড়া বাসায় গিয়ে মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায় নুর আলম।পরে বাড়ির মালিক আহত হাছিনাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা করে গ্রামের বাড়িতে পাটিয়ে দেয়। সে থেকে বাবার বাড়ি করল্যাছড়িতে রয়েছে ভুক্তভোগি হাছিনা।
গত সোমবার বিকালে ছোট ভাই শরিফ কে সাথে নিয়ে ঔষধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে করল্যাছড়ি বাজারে পাশে নুর আলমের বোনের জামাই আবুল হোসেন ও ভাগিনা মোতালেবসহ হঠাৎ করে অতর্কিত ভাবে হামলা করে। এতে হাছিনা অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে যায় এবং শরিফ গুরুতর আহত হয়। এ সময় হাছিনার কাছে থাকা ৫ হাজার ৫০টাকা ও স্বর্ণ অলংকার নিয়ে যায়। কানের দুল নেওয়ার সময় কান ছিড়ে যায় এবং টাকা নাদিয়ে বেশি বাড়াভাড়ি করলে খুন করার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি হাছিনা আক্তার ।
পক্ষান্তরে অভিযুক্ত নুর আলম এর সাথে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধায় ভর্তিকৃত হাছিনার মুখে,গলায় ও হাঁটুতে মারের দাগ রয়েছে। বামপাশের চোয়ালে ক্ষত বিক্ষত চিহ্ন ও শরীরের ব্যাথা রয়েছে। স্বাস্থ্যের অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতির দিকে আছে।