নুরুল আলম:: রাঙ্গামাটির লংগদুর উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের চারটি গ্রাম কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত। ফলে ঐ গ্রামগুলোর হাজারো মানুষকে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে গ্রামবাসীদের ভোগান্তি চরমে পৌছায়। আর তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে বগাচতর ইউনিয়নে গিয়ে জানা গেছে, এই ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার মানুষ বসবাস করেন। চার গ্রামের দুই পাড়ে রয়েছে একটি বাজার, নূরানী মাদ্রাসা এবং উগলছড়ি মহাজনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গ্রামগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনো ব্রিজ নেই। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় হ্রদ পার হয়ে প্রতিদিন স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বছর খানেক আগে এই হ্রদে নৌকা ডুবে দুইজন শিক্ষার্থী মারা গেছেন। ইউনিয়নের উগলছড়ি মহাজন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রী বলেন, আমরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ পার হয়ে গ্রাম থেকে স্কুলে যাই। এই নদীর হ্রদের ওপর যদি ব্রিজ হয় তাহলে আমাদের জন্য খুবই সুবিধা হবে। একই স্কুলের ৯ম শ্রেনীর শিক্ষাথীর্রা বলেন, নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করতে ভয় লাগে। অনেক অসুবিধাও হয়। একটি সেতু হলে আমরা খুবই উপকৃত হব।
বগাতর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার বলেন, মুসলিম ব্লক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া এই চার গ্রাম হ্রদ বেষ্টিত। ফলে এই গ্রামগুলো ইউনিয়ন সদর থেকে বিচ্ছিন্ন। একটি ব্রিজ না থাকার ফলে এখানকার গ্রামবাসীদের অত্যন্ত দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকারের কাছে দাবি এই এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে তারা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দেন।
বগাচতর ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, এই এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই নৌকায় করে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করে। এই চারটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে হ্রদ পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এতে করে তাদের যাতায়াতের অসুুবিধা হয়। একটি সেতু নির্মিত হলে এক গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে অন্য গ্রামের মানুষের এবং সড়ক যোগাযোগ বাড়ব্ েএলাকার সাধারণ মানুষ খুবই লাভবান হবেন। এলাকাবাসীর যাতায়াতের পথ সুগম করতে পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সেতু নির্মার্ণের দাবি জানিয়েছি। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, বগাচতর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা এবং ব্রিজের সমস্যা রয়েছে। জেলা পরিষদের বাৎসরিক বাজেটেও আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকে প্রধান্য দিয়ে থাকি। বগাচতর ইউনিয়নের দিকে আমার বিশেষ সুদৃষ্টি থাকবে এবং আগামীতে প্রকল্প গ্রহণ করলে ঐ ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা হবে।