নিজস্ব প্রতিবেদক, বিলাইছড়ি::: রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম ফারুয়া ইউনিয়নের এগুজ্যাছড়ি ফরেস্ট অফিসের পাশে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক এইএম ইসমাইল হোসেন এর আদালতে পাঁচজনকে আসামি করে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, অঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা ওরফে এজেন্ট (৩০), রুজন দাশ (২৪), সুমন্ত চাকমা (২৫), স্নেহাশিষ বড়ুয়া (২৪) এবং সুজন দাশ (২৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল রাতে মামলার বাদীনি তার স্থানীয় এক বন্ধুর বাসায় বিঝুর (বৈশাখী উৎসব) নিমন্ত্রণ শেষ করে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করার সময় পথিমধ্যে অভিযুক্ত পাঁচজন যুবক ওই কলেজ ছাত্রীকে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক এগুজ্যাছড়ি ফরেস্ট অফিসের কালভার্টের নিচে দলবেঁধে ধর্ষণ করে। ওই কলেজ ছাত্রীর এক বন্ধু ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত যুবকদের বাধা প্রদান করলে তাকে বেঁধে বেধড়ক প্রহার করা হয়। এসময় ৩ নম্বর আসামি সুমন্ত চাকমা ধর্ষণের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
পরবর্তীতে অব্ধন তঞ্চঙ্গ্যা এবং রুজন দাশ কলেজছাত্রীকে মামলা না করার জন্য হুমকি প্রদর্শন প্রয়োজনে তার বাবাকে হত্যা করার হুমকি এবং ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিবেন বলে হুঁশিয়ারি করেন। পরে ওই ছাত্রী চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে’ চিকিৎসা নেন। হাসপাতালের ছাড়পত্রেও গ্যাং রেফ’ এর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর ২৩ জুন আবারো অভিযুক্তরা যুবকরা আবারো ধর্ষণের হুমকি দেন ওই ছাত্রীকে। ২৮ জুন কলেজছাত্রী বিলাইছড়ি থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে ১২ আগস্ট আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কলেজছাত্রী।
রাঙামাটি লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী ও বাদীপক্ষের আইনজীবী সালিমা ওয়াহিদা বলেন, গণধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকে ঘটনার পর থানায় মামলা না করতে চাপ প্রয়োগ এবং ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয় অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে কলেজছাত্রী তাদে হাত থেকে বাঁচতে আদালতের শরাপন্ন হয়েছেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ আমলে নিলে বিলাইছড়ি থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিলাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, মামলা না নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। ঘটনার অনেক পরে স্থানীয় এক হেডম্যান অভিযোগটি দিতে এসেছেন। আমি উনাকে বলেছি, ভিকটিম যেহেতু জেলা শহরে থাকেন সেক্ষেত্রে আদালতে মামলা করতে পারেন কিংবা বিলাইছড়ি থানাতেও মামলা করা যাবে। তবে ভিকটিম ও তার পরিবারকে অবশ্যই আসতে হবে।