নিজস্ব প্রতিবেদক, নানিয়ারচর: দীর্ঘদিন ধরে অবহেলাভরে পড়ে আছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার দুর্গম নানাক্রম-পলিপাড়া-বুড়িঘাট সড়ক। স্থানীয়দের দুর্ভোগ ও কৃষকদের পণ্য পরিবহণে দুঃক্ষ লাঘবে দৈনিক রাঙামাটি পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশের ২বছর হলেও অদ্যাবধি সংস্কার হয়নি এই সড়কটি।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কয়েকটা কালভার্ট নির্মাণ ও মাটি কেটে পায়ে হাটা রাস্তা এসব আশার আলো দেখায় এলাকাবাসীকে।
কিন্তু এর পরে আর সড়ক উন্নয়নে কাজ না হওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, অত্র এলাকার সড়ক যোগাযোগ না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা, কৃষক কিংবা সাধারণ জনগণ পায়ে হেটেই ছুটে চলছে গন্তব্যে। এই এলাকার সাধারণ কৃষকরা কলা, আদা, হলুদ, আনারসসহ উৎপাদিত পাহাড়ি পণ্য পায়ে হেঁটেই নিয়ে যান হাট-বাজারে। স্থানীয়দের দাবি নানাক্রম-বুড়িঘাট সড়কটি নির্মাণ হলে এই অঞ্চলের প্রায় তিন হাজার কৃষক পরিবার ও প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের জীবন যাত্রার মান বদলে যাবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, “নানাক্রম-পলিপাড়া-বুড়িঘাট এলাকার একটি উন্নত সড়ক না থাকায় ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার ভোগান্তির স্বীকার। নানাক্রম-পলিপাড়া-বুড়িঘাট সড়কটির ফলে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি আরো জানান, বিগত বছর গুলোতে এই সড়কে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না হওয়ায় এবং ভারি বর্ষণের ফলে সৃষ্ট গর্ত সড়কের অনেক জায়গায় জনসাধারণ কে চলাচলে বিঘ্নতা ঘটাচ্ছে। ফলে স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা, কৃষক কিংবা সাধারণ জনগণের চলাচল ব্যহত হচ্ছে।
বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান কল্পনা চাকমা জানান, “এই সড়কটির উন্নয়ন হলে নানিয়ারচরের সাথে বুড়িঘাটের যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধা হবে। এতে করে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যেই নানিয়ারচর যাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও পরিবহন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। দ্রুত সময়ে এই সড়কটির উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, এই সড়কটি সংস্কার হলে উপজেলার সাথে বুড়িঘাট অঞ্চলের যোগাযোগ উন্নত হবে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন গ্রাম হবে শহর তার রুপরেখা বাস্তাবায়ন হবে। নানাক্রম-পলিপাড়া হতে বুড়িঘাট পর্যন্ত এই সড়ক নির্মাণ হলে সাধারণ কৃষকরা উপকৃত হবেন। আনারসসহ পাহাড়ি পণ্য পরিবহণে আসবে গতিশীলতা। সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে দ্রুতই এই সমস্যা নিরসনে আশাবাদী এই জনপ্রতিনিধি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, নানাক্রম বুড়িঘাট সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি আমাদের কর্ম পরিকল্পনায় রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পটির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে দ্রুতই এই প্রকল্প বাস্তাবায়নে কাজ শুরু হবে।