নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে সরকারি ঘর বরাদ্দের দোহাই দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ড্রাইভার মাসুদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাত ও টাকা চাওয়ার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য সকলের কাজ থেকেই বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করেন। তার এসকল কর্মকান্ডের কারণে প্রশাসনের উপর সাধারণ জনগন আত্মবিশ্বাস হাড়িয়ে ফেলছে।
পানছড়ি উপজেলায় দমদম এলাকায় রহিম হুজুরের বাড়ির পাশে মাসুদের ৩য় স্ত্রী নামে পাওয়া সরকারি ঘর ডিজাইন পরিবর্তন করে আলীশান বাড়ি নির্মাণের কাজ করছে মাসুদ এবং তার তৃতীয় স্ত্রী । দেখতে যেন কোটিপতির বাড়ি। বাড়ি নির্মানের কাজ দেখতে গেলে এলাকার প্রতিবেশীরা বলেন, প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে তাই বাড়ি ঘরের সুন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ঘর বড় করে আরাম আয়েশের দিন যাপন করার জন্য ঘর নির্মান করছে।
জানা যায়, পানছড়ি ইউএনও ড্রাইভার মাসুদকে সরকারি ঘর দিলে ঘরের কাঠামো পরিবর্তন করে বসবাস করছে স্বপরিবারে। এছাড়াও ড্রাইভার মাসুদের বিরুদ্ধে রয়েছে দূর্নীতির অভিযোগ সরকারি ঘর দেওয়ার নাম করে অসহায় মানুষ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। এমনকি ভিক্ষুক নুর নাহার এর কাছেও ঘর বরাদ্দের নাম করে অর্থ দাবি করার অডিও কল রের্কড ফাঁস হয়েছে।
স্থানীয় এক ব্যক্তি জানায়, সরকারি ভাবে ঘর দেওয়ার নাম করে ইউএনওর ড্রাইভার মাসুদ আমার শাশুরীর অসহায় দরিদ্র নুর নাহার এর নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় অন্যদের ঘর দিয়ে দিবে সহ বিভিন্ন রকম হুমকি দেয়। এই নিয়ে তার শাশুরী নুর নাহার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আব্দুর জব্বার কে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন জন থেকে বিপুল পরিমান অর্থ নিয়ে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে। মাসুদের অডিও রের্কড এ জানা যায়, ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময় ঘর বরাদ্দ পাইয়ে দেয়।
পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ড্রাইভার মাসুদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিয়ে করা, প্রতারণা, একাধিক অভিযোগ উঠেছে। পদ-পদবীতে কিন্তু তিনি ড্রাইভার নন। ইউএনওর স্বজনপ্রতিতার মাধ্যমে দপ্তরি হিসেবে নিয়োগ হলেও বর্তমানে তিনি চালাচ্ছেন গাড়ি। যেখানেই যান তিনি একের পর এক বিয়ে আর স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষন না দিয়ে তাদের উল্টো অভিযোগ তুলে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই আবার বিয়ে করায় যেন তার পেশা ও নেশায় পরিণত হয়ে উঠেছে। এমনটিই জানিয়েছে মাসুদের দুই স্ত্রী কুলছুম আরা বেগম ও মাহামুদা বেগম।
মাসুদের স্ত্রীরা জানান, একাধিক বিয়েসহ নানা অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও ইউএনও কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এতে তেমন কোন ফল হয়নি বরং মাসুদের হুমকির শিকার হচ্ছে বলে জানান স্ত্রীরা। তাই অভিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করে।
অপরদিকে পানছড়িতে গিয়ে ২ বছর আগে বিয়ে করে কুলছুম কে। অভিযোগের বিষয়ে মাসুদের দপ্তরি থাকা অবস্থায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বজনপ্রীতির কারনে বিয়ের পূর্বে কুনছুম কে ঘর বরাদ্দ দেওয়া সুযোগ করে দেওয়ার পর তাকে মাসুদ বিবাহ করে বলে জানান স্ত্রীরা। বর্তমানে তার ৩য় স্ত্রী সরকারি ঘরের ডিজাইন পরিবর্তন করে বসবাস করছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদে এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, এ বিষয়ে মাসুদকে তার স্ত্রীর অভিযোগির প্রেক্ষিতে ভরন-পোষনের ঠিকমত চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান। তবে সে তা না মানলে তার স্ত্রীদের আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। একই সাথে দপ্তরীর স্থলে ড্রাইভারী করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন তিনি।