নিজস্ব প্রতিবেদক:: মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৬ শত ১৬ টাকা নিয়ে পলাতক উক্ত কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মো: ফারুক মিয়া (৪৩) এর সাথে পরিবারের যোগাযোগ ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি যোগসাজস রয়েছে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
ইতিপূর্বে এই ঘটনার বিষয়ে জানতে জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধিরা তার শশুরালয়ের বাড়িতে গেলে তার শশুর শাশ্বরি শালা ও নিকট আত্মীয়দের সাথে আলাপ কালে তার উধাওয়ের কথা বল্লেও আলাপ চারিতায় বুঝা যায় তাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে।
ফারুকের শশুর বাড়ি দীঘিনালা পুরান বাজার পাড়া এলাকায় গিয়ে ফারুকের স্ত্রী ও অন্যান্যদের সাথে আলাপ চারিতায় তার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তারা স্পষ্ট কিছু না বলে এড়িয়ে চলে। এমনকি ফারুকের সরকারি টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সংমেলন করার কথা থাকলেও তাতে উপস্থিত না হয়ে নানান অযুহাত দেখিয়ে এই প্রোগ্রামটিও বাতিল করে। এতে স্পষ্ট যে ফারুকের সাথে তার শশুর বাড়ির লোকজন ও তার বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। সে সরকারি টাকা নিয়ে আত্মগোপন করে আছে বলে সচেতন মহলের ধারণা।
আবার কেউ কেউ বলছে, সে বর্তমানে চট্টগ্রামে তার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপন করে আছে। সরকারী টাকা উদ্ধার করতে হলে টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার দিনে কারা ছিলেন কেনই বা তার স্ত্রী ঐবাড়ি ছেড়ে দিঘীনালা চলে যায় তা তদন্ত করলে আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী আমো মগ বাদী হয়ে মহালছড়ি থানায় যে অভিযোগ করেছে তার সূত্র ধরে পুলিশ প্রশাসন গোয়েন্দা সংস্থা র্যাব ও দুদক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হলে সরকারী টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
পলাতক ফারুক মিয়া গত ১৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখ হইতে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসন কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে দাবি এলাকাবাসীর।
উল্লেখ্য, গত ১৬ই মে ২০২২ তারিখ সকালে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের বিল ও মার্চ থেকে মে মাসের কম্পিউটার খাতের ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৬শত ১৬ টাকার বিল নিয়ে পালাতক রয়েছে বলে মহলছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এইদিকে, মহালছড়ি শাখার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার টনক চাকমা জানান, নিরাপত্তা প্রহরী ফারুক মিয়া ১৬ মে দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৬ শত ১৬ টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান। যাহাতে তার স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর বিলের সাথে সংযুক্ত রয়েছে এবং সে টাকা উত্তোলনের যতেষ্ট প্রমানাধি ব্যাংকে সংরক্ষিত আছে।
মহালছড়ি সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সচেতন মহল।
মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হারুনুর রশিদের কাছে সরকারি টাকা নিয়ে উধাও এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিরাপত্তা প্রহরী পলাতক সংক্রান্ত বিষয়ে আমো মগ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় সরকারি কর্মচারী সরকারি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটায়। অভিযোগটি দুদকের আঞ্চলিক শাখায় প্রেরণ করি।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোবায়দা আক্তরের সাথে ইতিপূর্বে টেলিফোনে পালাতক ফারুক মিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অফিসে গিয়ে দেখা করার জন্য বলেন এবং এক পর্যায়ে তার সাথে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে মহালছড়ি উপজেলা পরিষদে তার কার্যালয়ে উপস্থিত হলে তিনি কাজের অযুহাত দিয়ে দেখা করায় অনিহা প্রকাশ করেন। এর পর একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ না করায় বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।