শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

পাহাড়ে ১৩০ চুল্লিতে গাছ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ


ডেস্ক নিউজ::: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির পাহাড় থেকে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে গাছপালা। অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব গাছ কেটে তা পুড়িয়ে উৎপাদন করছেন কয়লা। উপজেলার ১৩০ চুল্লিতে গাছ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হয়। এসব চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে বনাঞ্চল, বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পরিবেশ, বন্যপ্রাণী ও পাখি। সেই সঙ্গে হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য, কমে যাচ্ছে জমির উর্বরতা। বছরের পর বছর পরিবেশ বিধ্বংসী এমন কাজ চললেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।

উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে একাধিক ব্যবসায়ী ও চুল্লি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দ‚রে ঢাকাইয়া শিবির এলাকায় প্রথমে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি ও বিক্রি শুরু হয়। ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। একসময় ওই এলাকায় কাঠ সংকট দেখা দেওয়ায় ডাইনছড়ির ঘনবসতিপ‚র্ণ জনপদ বাঞ্চারামপাড়া ও মাস্টারঘাটার কয়েকটি পাহাড়ের গাছ কাটা শুরু হয়। অথচ সেখানে রয়েছে শত শত পরিবারের বসতি। ঘন ঘন বাড়িঘর থাকা সত্ত্বেও অনেক বাড়ির উঠানে গাছ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির চুল্লি বসানো হয়। এসব চুল্লিতে বছরের পর বছর পোড়ানো হচ্ছে বনের ও বাগানের গাছ।

গাছ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন এলাকার প্রভাবশালী মো. নজির আহম্মদ, আবদুর রাজ্জাক, মো. ন‚র ইসলাম, মো. আকতার হোসেনসহ আরও অনেকে।এসব ব্যবসায়ী জানান, শুধু মানিকছড়ি উপজেলায় কয়লা তৈরির চুল্লি আছে ১ এক শাত ৩০টি। মাসে এসব চুল্লিতে গড়ে গাছ পোড়ানো হয় অন্তত ৬শত মণ। সব চুল্লিতে প্রতি মাসে গড়ে ৭৮ হাজার মণ গাছ পুড়িয়ে তৈরি করা হয় কয়লা।

স্থানীয়রা জানান, গত ১০ বছর ধরে অবাধে গাছ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পরিবেশ। এরপরও ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। কয়লা ব্যবসায়ী ও বাটনাতলী‘র ব্যবসায়ী বলেন, ামরা গাছের পরিত্যক্ত অংশ লাকড়ি হিসেবে কিনে চুল্লিতে পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করি। পরে কয়লা বিক্রি করি। এতে পরিবেশের ক্ষতি কীভাবে হয় তা বুঝি না। এই ব্যবসায় অপরাধের কিছু তো দেখছি না।’

‘দীর্ঘদিন এই ব্যবসা করলেও তা অবৈধ কিনা সে বিষয়ে কখনও কেউ কিছুই বলেনি আমাদের। সম্প্রতি এক ব্যবসায়ী কয়লা কিনে ট্রাকযোগে সমতলে নেওয়ার সময় অবৈধ কাঠ থাকায় সেনাবাহিনী ও বন বিভাগ তা আটক করে মামলা দিয়ে থাকে। অবৈধ কাঠ থাকার কারণে ম‚লত ট্রাকটি আটক হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু আমরা বৈধভাবে ব্যবসা করছি।’

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!