নিজস্ব প্রতিবেদক:: পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলার ১৩০টি অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ৩দিনের মধ্যে আইনের ধারা ১৪ ও ১৯ প্রয়োগ করার নিদের্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট এবং ৬ সপ্তাহের মধ্যে উক্ত ইটভাটা ভেঙ্গে অপসারন করার নিদের্শ।
সম্প্রতি হাইকোর্ট দুটি আদেশ দেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটির বিভিন্ন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে এবং পাহাড় কাটা মাটি ইটভাটার কাচামাল হিসেবে ব্যবহার এবং বনের গাছ কেটে জালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন মিডিয়ায় রির্পোট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ ( এইআরপিবি) একটি রীট পিটিশন দায়ের করলে ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখ শুনানী শেষে হাইকোর্টে ৭দিনের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সকল ইটভাটা বন্ধের নিদের্শ এবং অবৈধ ইটভাটার তালিকা আদালতে দাখিল করার নিদের্শ দেন।
বিচারপতি জে বি এম হাসান এবং বিচারপতি ফাতেমা নজীব এর আদালতে আজ ৩দিন প্রশাসকের পক্ষে এভিডেভিট দাখিল করে রাঙামাটি জেলায় ২৫, বান্দরবান জেলা ৭০ এবং খাগড়াছড়ি জেলায় ৩৫টি মোট ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে বলে জানান। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে হাইকোর্টের নিদের্শ অমান্য করে ইটভাটার সামনে বন্ধের সাইনবোর্ড লাগিয়ে ইটপোড়ানো অব্যহত রয়েছে ।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে খাগড়াছড়িতে চলমান ব্রিগফিল্ড গুলো হলো, খাগড়াছড়ি সদরে ৫টি- সেলিম ব্রাদার্স, রুবেল এন্টার প্রাইজ, আশ্রাফুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ, সিরাজ ব্রীকস, ইমরান এন্টার প্রাইজ । পানছড়িতে ২টি-বিএনএম ব্রিকফিল্ড, সততা ব্রিগ ফিল্ড। দিঘীনালাতে ৩টি- সেলিম এন্ড ব্রাদার্স , কর্ণফুলী কর্পো,ে তিতাশ কর্পোরেশন। মহালছড়িতে ৩টি- পিকেপি ব্রিগফিল্ড, পিএবি ব্রিবফিল্ড, কালাম ব্রিগফিল্ড। মাটিরাঙ্গাতে ১২টি- এনবিএম, পেসিবি, বিবিএম, ৭৭৭, বিএমবি, এবিএম, ৪ বিএম, ১ স্টার, এনবিএম , এস এম বি , ৩ স্টার, বিএইচ বি। গুইমারায় ৫টি- ৪ স্টার, এসবিএম ও বাইল্যাছড়ি, সিন্দুকছড়িতে ৩টি সহ মোট ৫টি। রামগড়ে ৬টি- এস বি এম, হাজেরা ব্রিক, এনবিএম, আরবিএম , ৩৯ আইবিএম, আপন ব্রিগ ফিল্ড, কেকেএম ব্রিক ফিল্ড । মানিকছড়িতে ১টি- এসএমবি।
আদালত শুনানী শেষে এব অন্তবর্তিকালীন আদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকদের খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি এলাকায় থাকা লাইসেন্সবিহীন ১৩০টি ইটভাটা আগামী ৬ সাপ্তাহের মধ্যে ভেঙ্গে অপসারন করার নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং আদালতে ঈড়সঢ়ষরধহপব জবঢ়ড়ৎঃ দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত অপর এক আদেশে লাইসেন্স ব্যাতিত পরিচালিত সকল ইটভাটার বিরুদ্ধে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ধারা ১৪ ও ১৯ অনুসরন করে ৩দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের নিদের্শ দিয়েছেন।
উল্লেখিত অপসারনের নির্দেশের পর পার্বত্য অঞ্চলের খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে ইটভাটা অপসারনের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। বরং তারা অবৈধ ভাবে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকটার করে ইটভাটায় নিয়ে আসছে এবং পূর্বের ন্যায় ইট তৈরি ও পোড়ানো কাজ অব্যাহত রেখেছে। সচেতন মহল মনে করেন এসকল আইন অমান্যকারীদের আইনের আওয়াতায় আনা জরুরি। এছাড়াও জানা যায়, এসকল অবৈধ ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ। বিলে রয়েছে হাজার হাজার টাকার কারচুপি। যা সুস্থ্য তদন্ত করলে আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
ঐজচই পক্ষে পিটিশনার হলেন এডভোকেট মো: ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূইঁয়া এবং এডভোকেট রিপন বাড়ৈ। বিবাদীরা হলেন পরিবেশ সচিব, ডিজি, পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম, ডিসি, এসপি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি, ইউএনও এবং ওসি গুইমারা, দিঘীনালা, বোয়ালখালি এবং আলিকদম সহ মো: ২৪ জন।
আদালতে ঐজচই পক্ষে শুনানী করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং সরকার পক্ষে ছিলেন, ডিএজি তুষার কান্তি রায়। (রাঙামাটি ও বান্দরবানের ব্রিগফিল্ডের নাম ও মালিকের নাম সহ বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যায় আসবে।)