নুরুল আলম:: একের পর এক নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের বাজারে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পর এবার আগুণ লেগেছে সয়াবিন তেল,সরিষা তেলসহ খাদ্য কাজে ব্যবহারকারী তেলের বাজারে। সারাদেশের মত এই তেল এখন মরার উপর খারার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলাবাসীর জন্যও।
পাহাড়ি এ জেলায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারীর অভাবসহ বাজার মনিটরীং না করায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে খেয়াল খুশিমত। সচেতন মহল মনে করছে রমজানকে সামনে রেখে এবং মূল্য বৃদ্ধির ঘোষনার ফাঁদ সৃষ্টির মাধ্যমে বাজার ব্যবসায়ী ও কোম্পানীর সিন্ডিকেট চক্র ক্রেতাদের চাহিদাকে পুঁজি করে অতি মুনাফা আদায় করছে কিনা তা বাজার ব্যবস্থাপনা,মনিটরীংসহ গুদামগুলোতে তেল মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরীর অপচেষ্টার বিষয়টি নজর দিলে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তেলের বাজারের আস্বাভাবিক আগুণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন জেলাবাসী।
তথ্য অনুসন্ধ্যানে বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিশ^বাজার ও দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির অযুহাতকে কাজে লাগিয়ে বাজারে থাকা পুষ্টি,ফ্রেশ,ফরচুন,রূপচাঁদা,রাধুনিসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের তেলে বাজার এখন সয়লাভ হলেও হঠাৎ এসব তেল বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। আবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত দাম দিলেই এসব তেল গোপনে বিভিন্ন দোকানি ফোনালাপের মাধ্যমে বিক্রেতাদের সরবরাহ করতে দেখা গেছে।
বাজারের এমন তেলের সংকটের বিষয়ে ফ্রেশ সয়াবিনের ডিলার জাফর উল্লাহ বলেন,কোম্পানির নির্ধারিত কমিশনে আমরা তেল বিক্রি করছি। তবে বর্তমানে কোম্পানি তেল সরবরাহ করছে না জানিয়ে গুদামে তেলের মজুদ নেই বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে ফ্রেশ সয়াবিন তেল কোম্পানীর খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নারায়ণ কান্তি দেব সয়াবিন তেল বর্তমানে কোম্পানীর তরফ থেকে সরবরাহ নেয় এবং তেলে বেশ চাহিদা থাকলেও মূল্য বৃদ্ধির পর থেকে কোম্পানীর সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছে বলে স্বীকার করেন।
তিনি আরো জানান, কোম্পানী রেইটে লিটার প্রতি ১৬৪ টাকা পাইকারীর বিপরীতে খুচরা বাজারে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৮ টাকা। ২ লিটারে ৩২৬ টাকার বিপরীতে ৩৩৫ টাকা, ৫ লিটারে ৭৮০ টাকার বিপরীতে ৭৯৫টাকা ও আধা লিটারে ৮৫ টাকার বিপরীতে ৮৮টাকা মূল্য নির্ধারিত আছে। তবে কোন ব্যবসায়ী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতি লাভের জন্য বেশি নিলে সে দায়ভার কোম্পানির নয় বলেও তিনি জানান।
আবির এন্টারপ্রাইজ সত্তাধিকারী মো: জসিম উদ্দিন বলেন, রূপচাঁদা,মিজান বর্তমানে আমরা বিক্রয়ের কাজ করছি। গত সপ্তাহে তেলের সরবরাহ কম থাকলেও বর্তমানে তেল এসেছে। মূল্য বৃদ্ধির কারন হিসেবে কোম্পানীর পক্ষ থেকে বিশ^বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা কোম্পানীর প্রতিনিধিরা বলছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে সাধারন ক্রেতাদের অভিযোগ পর্যাপ্ত তেলের সরবরাহ থাকার কথা থাকলেও ব্যবসায়ী ও কোম্পানীর এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট চক্রের কারণে বর্তমানে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বাজারে তেলের অতিরিক্ত মূল্য তা ঘি ঢালা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন ক্রেতা আফজাল হোসেন,মংসানু ও সঞ্জয় দত্ত। খাগড়াছড়িতে ভোজ্য তেলের নানা কোম্পানী বাজারে দাঁপিয়ে বেড়ালেও বর্তমানে তারা মাথা লুকিয়ে মূল্য বৃদ্ধির সময় গুনছে কিনা তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের যথাযথ নজরদারী এবং গুদাম থেকে তেল অন্যত্র সরিয়ে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরীর কাজে ব্যস্ত। নাকি সে চক্র সাধারন মানুষের অসহাত্বের সুযোগ নিচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে বাজার মনিটরীং এর জোর দাবী জানিয়েছে সচেতনমহল।