নুরুল আলম: খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার এগার মাইল নামক স্থানে নিউজালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে ১৫ একর জায়গায় প্রকাশ্যে পাহারের কচিঁ কাঁচা গাছ কেটে উজার করছে শাহিন নামক এক ব্যক্তি।
এলাকাবাসীর মতে এই সকল কঁচি কাঁচ মূল্যবান গাছ কেটে কাঠ ব্যবসায়িদের নিকট বিক্রি করছে। অবৈধ কাঠ পাচার কারিরা সেগুন ও গামারির বড় বড় কাঠ গুলো বিভিন্ন জোতপারমিটের সাথে মিশিয়ে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করছে যাহা সম্পূর্ণ বেয়াইনি। এতে করে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। ১৫ একর বাগান হচ্ছে উজার। এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা না নিলে সকল গাছ কেটে পাঁচার করবে এই অসাধু ব্যবসায়ী। ইতিপূর্বে ঐ স্থান থেকে প্রায় ২০-২৫ হাজার ঘনফুট সেগুন গামারী কাঠ অবৈধভাবে বিক্রি করেছে আলী আকবর ভূইয়ার অলি ওয়ারিশেরা।
খোজ নিয়ে জানাযায়, ঐ জায়গার মালিক আলী আকবর কিনা পরিবারের ছেলে ও তার স্ত্রীর নামে ১৫ একর জায়গা রেকর্ডীয় বলে জানা গেছে। তারা সরকারি জোত ও অনুমতি ছাড়াই প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে এই মূল্যবান কাঠ গুলো বিক্রির সহযোগিতা করছে এবং শাহিন নামক এক ব্যক্তি ১৫ একর জায়গার গাছ কেটে কচু লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানাগেছে।
অপরদিকে, গুইমারা, লক্ষ্মিছড়ি, রামগড়, মানিকছড়ি, উপজেলায় বিকল্প রাস্তা দিয়ে রাতে ও প্রকাশ্যে দিনে বন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারিদের যোগসাজেসে, কোঁচি কাঁচা জ্বালানি কাঠ ট্রাক ও চাঁদের গাড়ি দিয়ে ফটিকছড়ির বিভিন্ন ইটের ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। রামগড় উপজেলা প্রশাসনে ছত্রছায়ায় ও বনবিভাগের যোগসাজেসে ইটের ভাটায় জালানী কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এলাকার ইটভাটায় ব্যবহার ও দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানের সংরক্ষিত ও সামাজিক বনায়নের কাঠ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে অন্তত ২০-২৫ টি ট্রাক ও ৩০-৩৫ টি চাদেঁর গাড়ি করে।
দীর্ঘদিন ধরে ফটিকছড়ি উপজেলার কাজিরহাট-নাজিরহাট এবং খাগড়াছড়ি সংযোগ সড়কে বিবিরহাট-নাজিরহাট সড়কটি কাঠ পাচারের নিরাপদ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই এলাকার কাঠ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঠ কিনে তা সুবিধাজনক স্থানে রাস্তার ধারে এনে জমা করেন। সেখান থেকে ট্রাক ও জীপে বোঝায় করে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয।
জালিয়াপাড়ার স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, কাঠ পাচার অনেক দিন ধরেই চলছে। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু জন প্রতিনিধিদের বিরোধিতা ও আমাদের জনবল সংকটের কারণে এসব বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। তার পরও সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা বৃক্ষনিধন রোধে তৎপর রয়েছি।
রামগড় উপজেলার এগার মাইল নিউ জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে ১৫ একর বাগান কর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে সোনাইফুল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: সুলতানুল আজিমকে জানালে তিনি বলেন, আমরা সবসময় অবৈধভাবে গাছ কাটা ও পাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই কিন্তু আমাদের লোকবলের অভাবে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ায় অভিযান চালানো সম্ভব হয়না। এই পর্যন্ত ২ থেকে ৩ হাজার ঘনফুট জ্বালানি ও গোল কাঠ আটক করেছি। এগারো মাইলের বাগান কাটার বিষয়টিও উর্ধতন কর্মকর্তারদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই বিষয়ে খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির এর সাথে কাঠ পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানীয় রেঞ্জের মাধ্যমে গাছ কাটা বন্ধ করার নিদের্শ দিয়েছি। সরকারি রাজস্ব দিয়ে পারমিট নিয়ে গাছ কাটার পরামর্শ দিয়েছি। তা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।