শিরোনাম
মঙ্গল. ডিসে ২৪, ২০২৪

রামগড়ে স্ত্রী ও শিশু হত্যার ৫দিন পরও গ্রেফতার হয়নি হত্যাকারী

নুরুল আলম:: খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত মধুপর এলাকায় তালাবদ্ধ ঘর থেকে মা ও শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার ৫দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি রামগড় থানা পুলিশ।

রামগড় থানা সূত্রে জানাযায়, গত ৭ জানুয়ারী শুক্রবার মা ও মেয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনার মামলাটি সিআইডিকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হত্যাকারি মো: সোলেমান মিস্ত্রিকে পুলিশ গ্রেফতার করতে ব্যর্থতাকে দায় করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এই ঘটনায় ভোক্তভোগিরা আসামী সোলেমান কে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানাগেছে।

উল্লেখ্য, পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, রামগড়ের পাতাছড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গম মধুপুর গ্রামে পাহাড়ের ঢালুতে অবস্থিত সোলেমান টিন সেডের তালাবদ্ধ ঘর থেলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গতসোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে খাটের উপর লেপ ও তোষকে মোড়ানো অবস্থায় মা খালেদা আক্তার পিংকী (২৪) ও ৪মাস বয়সী শিশু কণ্যা সালমা আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধা করে। পুলিশ ঐ ঘর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি দা জন্দ করেছে।

গত সোমবার (৩ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় ঘরের তালা ভেঙ্গে খাটের উপর লেপ-তোষকে মোড়ানো অবস্থায় মা খালেদা আক্তার পিংকি (২৪) ও ৪ মাস বয়সী শিশু কন্যা সালমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। নিহত খালেদা আক্তার পিংকীর হত্যা মামলার আসামী মো: সোলেমান পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

হত্যাকারী সোলেমান পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। প্রায় ৮ বছর আগে মধুপুরের জাহেদ আলীর ছেলে সোলেমানের বিয়ে হয় একই এলাকার আব্দুল খালেক দুলালের মেয়ে খালেদা আক্তারের সাথে। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা ছিল না। এক মামাত বোনের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে পারিবারিক কলহ ছিল নিত্যদিন। তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান ছিল। ৬ বছরের কণ্যাটি থাকে নোয়াখালীতে দাদারবাড়িতে। কয়েকদিন আগেও পারিবারিক কলহের কারণে সালিশ হয়।

সর্বশেষ সালিশের পর গত বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে খালেকের মেয়ের বাড়িতে দাওয়াত খান। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পেয়ে বেয়াইনকে (সোলেমানের মা) ফোন করে খোঁজ নিতে বলেন। ঘর তালাবদ্ধ দেখে আত্মীয়-স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গা তাদের খোঁজ নেয়ার চেষ্ঠা করে। এদিকে গত সোমবার (৩ডিসেম্বর) বেলা ৪ টার দিকে এলাকার লোকজন তালাবদ্ধ ঘর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয় নাকাপা ফাঁড়ির পুলিশকে খবর দেয়। পরে রামগড় থানায় খবর দেয়া হলে রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ দরজার তলা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে খাটের উপর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে।

রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ সামছুজ্জামান জানান, স্বামীর পরকীয়ার কারণে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ জোরা খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সোলেমান প্রথমে স্ত্রী খালেদা আক্তারকে ধাড়ালো দা দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যার পর ৪ মাসের কন্যা শিশুকে জবাই করে হত্যার করে লেপ তোষক দিয়ে লাশ দুটি মড়িয়ে রেখে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতেই এ হত্যাকান্ড হয়। এলাকাবাসী বলেন, শুক্রবার সকালে নাকাপা বাজারে রাস্তার পাশে বাসের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

সোমবার রাত ১০টায় ওসি আরোও জানান, নিহত খালেদা আক্তারের বাবা আব্দুল খালেক দুলালের মেয়ে ও নাতনীর হত্যার ঘটনায় সোলেমানকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামি পলাতক রয়েছে।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!