নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়ির গুইমারায় প্রাঁণঘাতি মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু। নিরাপত্তাবাহীনির অভিযানে উদ্ধার হচ্ছে মদ, ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল। গুইমারা উপজেলার হাজাছড়া এলাকায় ৩০আগস্ট ২০২১ সোমবার রাত আনুমানিক ৭টার দিকে মাদক কারবারী দুর্বৃত্তরা গাঁজা পাচার ও অবৈধ চোলাই মদ বিক্রি করছে স্থানীয় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৩হাজার লিটার চোলাই মদ, ১হাজার টাইগারের বোতল ভর্তি মদ, মুলি ও মদ তৈরীর সরঞ্জামসহ মদের কারখানা থেকে চাইলামং মারমা(৪০) নামের একজনকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। মাদক পাচারের কাজের সাথে জড়িত অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়।
জানা যায়, সোমবার রাতে স্থানীয় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কর্পোরাল ওমরের নেতত্বে ২৪ আর্টিলারী ব্রিগেড গুইমারা রিজিয়নের সি টাইপ টহল খাগড়াছড়ি’র গুইমারা উপজেলাধীন হাজাপাড়াস্থ সংগ্রাম দাশের বাড়ীতে অভিযান চালায়। এসময় ৪টি ঘরে তল্লাসী চালিয়ে ৩হাজার লিটার চোলাই মদ, ১হাজার বোতল ভর্তি মদ, মদ তৈরীর চুলা ও কারখানা এবং প্রায় দুই’শ টি বড় বড় পাত্র, উদ্ধার করে।
সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সংগ্রাম দাশ(৪৫) নামে এক মাদক চোরাকারবারী বাড়ি থেকে প্রায় ৫কেজি গাঁজা নিয়ে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে জব্দকৃত চোলাই মদ, মদ তৈরীর সরঞ্জামাদি সহ আটকৃত চাইলামং মারমাকে গুইমারা থানায় হন্তান্তর করা হয় ।
অনুরুপ ভাবে বিভিন্ন এলাকা থেকেও পাওয়া যাচ্ছে মদ, ইয়াবা, গাজা, ফেনসিডিল, হিরোইন থেকে শুরু করে ভারত থেকে আসা বাহারি মোরকের সব বিদেশী মদ। এতে করে বিপদগামী হচ্ছে উঠতি বয়সের যুব সমাজ ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। ঘটছে সামাজিক অবক্ষয়। লাভবান হচ্ছে স্থানীয় এক শ্রেনীর মাদক পাচারকারী দালাল চক্র। তারা বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার নামে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা নেওয়ারও তথ্য উঠে আসছে মানুষের মুখে মুখে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিনের বেলায় যেমন তেমন রাত নামলেই এখানে রঙিন। জগতে পা বাড়ায় মাদক আসক্তরা। বিভিন্ন স্পর্ট ভেঁদে নানা কৌশলে মাদক সিন্ডিকেট চক্র তাদের এসব রমরমা অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
নতুন নতুন কৌশল অবলম্বণের অংশ হিসেবে ইয়াবা বিক্রিতে মাদক কারবারীরা এবার ব্যবহার করছে জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার কলম। শীষ যুক্ত কলমে প্রয়োজন অনুসারে ইয়াবা ট্যাবলেট প্রবেশ করিয়ে তা প্রকার ভেঁদে বিক্রি হচ্ছে।
গুইমারার জালিয়াপাড়া,বড়পিলাক হচ্ছে এই ব্যবসার কেন্দ্র বিন্দু। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাতেই মাদক কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠে। এখানে মোট ৮টির ও অধিক টিম নানা কৌশলে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ভাবে স্যাল্টার পেয়ে দীর্ঘ সময় এই যজ্ঞ চালিয়ে গেলেও অনেকের কাছে আকাশ থেকে মাটিতে পড়ার মত বিষয়টি।
বিশস্ত সূত্র জানান, প্রতিরাতে গুইমারা, হাজাপাড়া, বাজার পাড়া, ডাক্তার টিলা, জালিয়াপাড়া, বাইল্যাছড়ি, হাতিমুড়া, বড়পিলাক, তৈকর্মা, সিন্দুকছড়ি সহ বিভিন্ন জায়গার এই যজ্ঞ চলছে। কারা এই মাদকের ডিলার,সরবরাহকারী? স্থানীয়দের অভিযোগ মোটা অঙ্কের অর্থেই সকলে মিলেমিশে একাকার হয়েছেন! তাই এসব বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সূত্রমতে, মদ উৎপাদন ও পাচার কারীর গড ফাদার সংগ্রাম এর সাথে রয়েছে একটি বড় চক্র। তারা ৬/৭ বছর থেকে সংগ্রামের মদ উৎপাদনকারী কারখানা থেকে জেলার বাহিরে চট্টগ্রাম কুমিল্লা ঢাকা সহ অন্যান্য সমতল জেলায় নেওয়ার বিষয় সহযোগিতা করার জন্য মোটা অংকের টাকা দিতো। সংগ্রামের স্ত্রী আবুমা মারমা বলেন, তার পূর্বের স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে এই মদ তৈরির কাজ শুরু করেন। এতে সহযোগিতা করেন, স্বামী সংগ্রাম। সংগ্রাম ও অন্যান্যদের মাধ্যমে বিশাল মদ ও গাজার চালান গুলো পাঠানো হতো যাত্রিবাহী বাস, মাইক্রো সহ বিভিন্ন অভিনব কায়দায়। আর প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বাজারে বিক্রি হতো চোলাই মদ ও গাজা। অপর একটি সূত্রে জানা যায় সংগ্রাম সিন্দুকছড়ি বাজারেও মদ ও গাজা বিক্রিয় করে।
সম্প্রতি গুইমারা রিজিয়ন সেনাবাহীনির অভিযানে মাদক দ্রব্য, অস্ত্র, ও চাঁদা আদায়কালে সন্ত্রসীদের আটক করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। এই ব্যপারে যৌথ অভিযোগ চালালে এসব মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা আইনের আওতায় আসবে।