নুরুল আলম: খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এক শ্রেনীর দুষ্ট চক্র। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করার পরও খাগড়াছড়ির পানছড়িতে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ ছাড়াই বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড় ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।
চেঙ্গী নদীর রাবার ড্যাম এলাকা থেকে গত ৮ মাস ধরে স্থানীয় ঠিকাদাদের যোগসাজশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী কোন ড্যাম এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে বিপণনের উদ্দেশ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ ড্যাম সংলগ্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের পক্ষে সাফাই করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ২০২০-২১ অর্থবছরে টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ সেক্টও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চেঙ্গী নদীর উপর ৮০মি ড্যাম প্রকল্পে মেরামতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৬২ লাখ ৬০ হাজার ৯৮৮ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মেসার্স রীপ এন্টারপ্রাইজ মনোনীত হলেও উপ-ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় ঠিকাদার প্রকল্পের কার্যাদেশে চেঙ্গী নদী থেকে পলি উত্তোলনের কথা বললেও তা না করে রাবার ড্যাম সংলগ্ন এলাকা থেকে মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। সেসব বালু বিক্রি করা হচ্ছে। এলজিইডির প্রকল্পের দোহায় দিয়ে বালু উত্তোলনের পিছনে উপজেলা প্রকৌশলী অরুণ কুমার দাসের যোগসাজশ রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছে ঠিকাদার।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, পানছড়ি উপজেলায় কোন বালুমহাল নেই। সে হিসেবে বালু উত্তোলন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ চেঙ্গীর বুক থেকে প্রতিদিন মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শনে এমন চিত্র দেখা গেছে। পানছড়ি উপজেলায় রাবার ড্যাম এলাকায় মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত বালু রাবার ড্যামের পাশে স্তুপ করা হয়েছে। গত আট মাস ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করলেও উপজেলা প্রশাসন কেবল একবারই অভিযান পরিচালনা করেছে। এছাড়া বিনা বাধায় বালু উত্তোলন করায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অপরদিকে, বাইল্যাছড়ির চেয়ারম্যান পাড়া ব্রিক ফিল্ড এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তলন করে ট্রাক, ট্রাকটার বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে মাটিরাঙ্গার এক শ্রেনীর বালু উত্তলনকারী দুষ্ট চক্র। এতে করে সরকার হাড়াচ্ছে লাক্ষ লাক্ষ টাকার রাজস্ব্য ক্ষতি হচ্ছে গুইমারা এলাকার খালবিল ব্রিজ কালবার্ড সহ আশে পাশের ফসলী জমি। এব্যাপারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সচেতন নাগরীকদের।