নিজস্ব প্রতিবেদক:: খাগড়াছড়িতে ভূমি দখল ও প্রভাব বিস্তার করে দূর্নীতি। ভূমি নিবন্ধন, নামজারি ভূমি সংক্রান্ত সরকারী জায়গা দখল সহ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় অসহায় নিরিহ পরিবার ও ভোক্তোভোগিরা। ভোক্তোভোগিদের দাবি, দূর্নীতি দমন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষন করে এই সকল দূর্নীতি সুষ্ঠ তদন্ত করলে আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন), ভূমির নামজারি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, মানুষের ভোগান্তি শেষ নেই। এছাড়াও এক জনের জায়গা অন্যজনের নামে নামজারী করে রেজিষ্ট্রি সর্ম্পূন করার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। স্থানীয়দের দাবি তাদের বাব-দাদার জায়গা অন্যরা জোর করে দখল করে মামলা মকদ্দমায় জড়িয়ে যোগ যোগ ধরে মামলা করেও তার সুষ্ঠ বিচার পাচ্ছে না।
গত রোববার ৮ আগস্ট ২০২১ খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পর্রিদশনে জানা যায়, গুইমারা সদর ইউনিয়নের বাজার পাড়ার বাসিন্দা ইদ্রিস মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম এর ১৯৭ নং গুইমারা মৌজায় ২১০ নং খতিয়ানের ৬৭৭/৭০৫/৬০৬ দাগের অন্তরর্ভ্ক্তু ১.২০ (এক একর বিশ শতক) জায়গা র্রেকড ভুক্ত আছে। যা রবিফুক ইসলামের ভোগ দখলে রয়েছে।
এইদিকে, প্রায় ১বছর আগে থেকে হ্লাচাই মারমা এই জমি দখলের ষড়যন্ত্র মেতে উঠে। ইতিপূর্বে হ্লাচাই মারমা, দিদারুল আলম ও নাছির উদ্দিন মানিক রাতের আধারে জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে আংশিক জায়গার উপর টিনসেট ঘর নির্মাণ করেন এবং পানি সংস্কারের জায়গা বন্ধ করে দেন ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়।
বড়পিলাক এলাকায় নজরুল ইসলাম সাহাবুদ্দিনের নিকট হইতে গত ১৭ জুন ২০১৫ সালে ২০৯ নং বড়পিলাক মৌজা ১২৯ নং হোল্ডিং এর ২৪৭২ দাগের (আংশিক) ১.৩৪ (এক একর চৌত্রিশ শতক) একর ও দাগ নম্বর ২৪৭৪ (র্পূন) ০.৬৬ (ছিষট্টি শতক) একর মোট ভূমির পরিমান ২ (দুই একর) একর জায়গা ক্রয় করে।
উল্ল্যেখিত জমির লোভ সামলাতে না পেরে আজাহার শেখ, শুক্কুর আলী, আমির হোসেন নজরুল ইসালামের ফলজ বাগানের প্রায় ২ একর জমি জোর দখল করে। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মামলা হয়।
অন্যদিকে, খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত নরীহ গরিবদের কে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মুলক মামলা হামলা শারিরীক নির্যাতন সহ নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে মো: সালেহ উদ্দিন, মো: ফরিদ মিয়া ও মো: হানিফ সহ একটি দুষ্টচক্র।
ইতিমধ্যে, ফাতেমা বেগম নামে এক মহিলা অভিযোগ করেন যে, তার নিজ বাড়িতে মো: ফরিদ মিয়া কে ভাড়াটিয়া রাখেন কিন্তু পরবর্তিতে উক্ত ভাড়াটিয়া ফাতেমা বেগমের বাসা অবৈধ দখল করে। এই বিষয়ে ফাতেমা বেগম প্রতিবাদ করলে ছালেহ উদ্দিনের মদদে তাকে বেধরক মারধর করে ভাড়াটিয়া ফরিদুল মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম। ছালেহ উদ্দিনের পরিবার ও তার লোক জনের নির্যাতনে স্বীকার ফাতেমা বেগম, সুফিয়া বেগম, স্বামী: মো: হানিফ, নুর খাতুন স্বামী: জবেদ আলী, কহিনুর বেগম, স্বামী: জাকির হোসেন, আজগর আলী, জালাল, বেলাল, সিদ্দিক ও শহিদুলের মা হাওয়া বিবি সহ আরো অনেক পরিবার কে হয়রানি করে আসছে বলে তারা জানান।
এই বিষয়ে সলেহা উদ্দিনের কাছ থেকে জানতে পাইলে তিনি বলেন, সুবেদার নরুল ইসলাম জালিয়াপাড়া ক্যাম্পে চাকরি করতেন। তৎকালীন মংসাই মগের নিকট হতে নুরুল ইসলাম জায়গা ক্রয় করে। পরিবর্তীতে নরুল ইসলাম তার ক্রয়ক্রত ১৪ নং হোল্ডিং এর (হাফছড়ি) ৪ একর জায়গা সালেহ উদ্দিনের নিকট বিক্রি করেন বলে দাবি করলেও বিক্রেতা মৃত্যুর পর নুরুল ইসলামের ওয়ারিশগনের নিকট রেজিষ্ট্রি করার জন্য নামজারি মামলা রজু করলে একজন ওয়ারিশকে নিয়ে এসে রেজিষ্ট্রি নেওয়ার পায়তারা করছে। কিন্তু তার ওয়ারিশ হলো ১০ থেকে ১২ জন। উক্ত জমি বিরোধ নিষ্পোত্তি করার জন্য স্থানীয়রা ওয়ারিশদের আনতে বললেও সে ওয়ারিশদেরকে আনতে ব্যর্থ হয়। এতে সচেতন মহলের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এইদিকে ভুক্তোভোগিদের দাবি সুবেদার নুরুল ইসলাম থেকে জায়গা ক্রয় করে ৪ একর কিন্তু উক্ত জমির পরিমার প্রায় ৭-৮ একর। ৪ একরের অবশিষ্ট জায়গায় অসহায় ৯ থেকে ১০ পরিবারের ঘরসহ দখল করার চেষ্টা করছে ।
অপরদিকে, সুবেদার নুরুল ইসলামের ছেলে আলী হোসেন থেকে ১৪ নং হোল্ডিং এর তার পিতার নামীয় ৪ একর জায়গা থেকে ৪০ শতক জায়গা ক্রয় করে রফিকুল আলম ও তাজুল ইসলাম। সালেহা উদ্দিন কৌশলে রফিকুল আলম ১০ শতক জায়গা মেপে দিয়ে অসহায়দের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভোক্তোভোগির দাবি, সালেহা উদ্দিনের ৪ একর জায়গা ক্রয়-বিক্রয়টি তার সকল ওয়ারিশ কে না এনে ভূয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে সুবেদার নুরুল ইসলামের ১৪ নং হোল্ডিং এর জায়গাটি দূর্নীতির মাধ্যমে ভূয়া ওয়ারিশ দেখিয়ে রেজিষ্ট্রি করার পায়তারা করছে।