নুরুল আলম
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় ব্যবসায়ী মো. আবুল বাশার হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারকৃত দুই খুনি মো. আব্দুস সালাম ও আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগর আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে । হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ বুধবার (২ জুন) সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য দেন । মূলত পাওনা সাড়ে তিন লাখ টাকা চাইতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হন ব্যবসায়ী মো. আবুল বাশার।পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, হত্যার পর আবুল বাশারের লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়।
নিখোঁজের এক দিন পর গত ২৮ মে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পাশে পাহাড়ের গভীর খাদ থেকে মো. আবুল বাশারের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আবুল বাশারের ছোট ভাই আবুল কালাম অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মাটিরাঙা থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, কয়েক মাস আগে ব্যবসায়ী মো. আবুল বাশারের কাছ থেকে ব্যবসা করার কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকার ধার নেয় প্রতিবেশী আব্দুল সালাম। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ায় দুইজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আবুল বাশারকে গল্প করার কথা বলে নিজের মুরগীর খামারে ডেকে নেয় আবদুস সালাম। এক পর্যায়ে আবদুস সালাম থেকে নিজের পাওনা সাড়ে তিন লাখ টাকা চাইলে আবুল বাশারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুস সালাম প্রথমে লাঠি দিয়ে আবুল বাশারের মাথায় আঘাত করেন। পরে গলায় দড়ি পেচিয়ে ধরে।
এরপর অপর সহযোগী স্থানীয় মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগরের সহায়তায় কাঠের বল্লিতে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে মূল ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিহত আবুল বাশারের বাড়ির পাশের খাদে মরদেহ ফেলে দায়ের উল্টো দিক দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর তারা পুনঃরায় খামারে ফিরে এসে ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত ধ্বংস করে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, মামলায় আসামি অজ্ঞাত হলেও পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগরকে আটক করে। তার স্বীকারোক্তিতে অপর হত্যাকারী আব্দুল সালামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামতও উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান, হত্যাকারীরা নিজেদের আড়াল করার জন্য আবুল বাশারের লাশ উদ্ধার, ময়না তদন্ত ও জানাযায়ও অংশ নেয়।